
আশির দশকে সংবাদপত্রে অভিনেতা দীপক পরাশরকে অমিতাভ বচ্চনের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। কারণ, ‘ইনসাফ কা তারাজু’ ‘নিকাহ’ ‘শারাবি’সহ বেশ কয়েকটি সফল সিনেমায় অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। সেই সময় নানা বিতর্ক ও গুজবের মুখে পড়েন দীপক। বিশেষ করে তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয় সমকামীতার মত গুরুতর অভিযোগ। ফলে একের পর এক সিনেমা থেকে বাদ পড়ায় বাধ্য হয়ে তিনি বি-গ্রেড সিনেমায় অভিনয় করতে শুরু করেন।
সিনেমার পাশাপাশি দীপক পরাশরের ব্যক্তিগত জীবনও তখন ভেঙে পড়ে। ১৯৮৭ সালে তাদের মেয়ের বয়স মাত্র পাঁচ মাস, তখন দীপককে ছেড়ে চলে যান সারিতা। দীর্ঘদিন আলোচনার বাইরে থাকার পর ফিরে আসা কঠিন ছিল উল্লেখ করে দীপক।
সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর তার স্ত্রীর আচরণ সম্পূর্ণ বদলে যায়। একদিন তার স্ত্রী তাকে বলেন- ‘আমি শুধু গ্ল্যামারের জন্য তোমাকে বিয়ে করেছি।’
বিচ্ছেদের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই আরও বড় বিপর্যয় নেমে আসে দীপকের জীবনে। তিনি জানান, একদিন মায়ের কাছে আলমারি থেকে কিছু টাকা নিতে গিয়ে দেখেন সবকিছু ফাঁকা। ব্যাঙ্ক লকারেও কিছু ছিল না।
তিনি বলেন, ‘গহনাসহ সব নগদ টাকা কিছু নিয়ে চলে যান তার স্ত্রী। আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েছিলাম।’
পরে তিনি আরও জানতে পারেন তার প্রাক্তন স্ত্রী বি. আর. চোপড়াসহ ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুদের কাছেও তার বিরুদ্ধে নানা গুজব ছড়িয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে ওঠা নানা গুজব, বিশেষ করে তার যৌনতা নিয়ে ওঠা জল্পনা প্রসঙ্গেও দীপক স্পষ্ট কথা বলেছেন।
দীপক বলেন, ‘আমি কখনও নিজের যৌনতা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলিনি। কারণ, তার কোনও প্রয়োজনও নেই। আমি সমকামী নই। আমাকে নিয়ে বিভিন্ন মহল বিভিন্ন ধরনের গুঞ্জন ছড়ানো চেষ্টা করেছে মাত্র।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই আছেন যাদের সমকামী হওয়ায় তাদের কেরিয়ারে কোনও প্রভাব পড়েনি, তাই তিনি বিশ্বাস করেন না যে একটি গুজব তার ক্যারিয়ার নষ্ট করতে পারে।
বিআর চোপড়ার প্রযোজনায় বেশ কিছু সফল ছবিতে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন দীপক। তার মতে, সেই সময় অমিতাভ কিছুটা নিরাপত্তার অভাব অনুভব করতেন হয়তো। কারণ, দীপক তখন ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষস্থানীয় অনেক জনপ্রিয় নায়িকার সঙ্গে কাজ করছিলেন।
Comments