Image description

ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে গত তিন বছরে মস্কোর প্রায় ১২ লাখেরও বেশি সেনা হতাহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) প্রকাশিত ইউক্রেনীয় জেনারেল স্টাফের এক নিয়মিত প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত রাশিয়ার সামরিক শক্তির অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ইউক্রেনের দাবি অনুযায়ী, যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার মোট প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ১ হাজার ২৩০ জনে। গত ২৪ ঘণ্টাতেই কিয়েভ বাহিনীর অভিযানে রুশ বাহিনীর অন্তত ৮৬০ জন সেনা হতাহত হয়েছে।

শুধু জনবল নয়, সামরিক সরঞ্জামের ক্ষেত্রেও রাশিয়ার বড় ধরনের ক্ষতির তালিকা প্রকাশ করেছে কিয়েভ ইনডিপেনডেন্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া এ পর্যন্ত হারিয়েছে:

ট্যাংক: ১১ হাজার ৪৫৬টি।

সাঁজোয়া যুদ্ধযান: ২৩ হাজার ৮০১টি।

আর্টিলারি সিস্টেম: ৩৫ হাজার ৪৩৫টি।

আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা: ১ হাজার ২৬৩টি।

বিমান ও হেলিকপ্টার: ৪৩৪টি বিমান এবং ৩৪৭টি হেলিকপ্টার।

ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র: প্রায় ৯৫ হাজার ড্রোন এবং ৪ হাজার ১০৭টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র।

নৌযান: ২৮টি জাহাজ ও দুটি সাবমেরিন।

যুদ্ধের এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই ২৪ ডিসেম্বর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে একটি খসড়া শান্তি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পেশ করা এই ২০ দফার প্রস্তাবনায় যুদ্ধের স্থায়ী সমাধানের পথ খোঁজা হয়েছে।

তবে শান্তি আলোচনায় এখনো বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রস্তাবনার ১২ ও ১৪ নম্বর ধারা। এই দুটি ধারায় ইউক্রেনের দখলকৃত ভূখণ্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণ এবং গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় অবকাঠামোর নিরাপত্তার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ইউক্রেন এই ইস্যুগুলোকে তাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত বলে মনে করছে, যা নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছানো বর্তমানে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, একদিকে ইউক্রেনের পাল্টা আঘাত এবং অন্যদিকে শান্তি প্রস্তাবের জটিলতা—সব মিলিয়ে সংঘাত এক অনিশ্চিত মোড় নিয়েছে। কিয়েভের দাবি করা এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।