“দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা: গড়বে আগামীর শুদ্ধতা” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারা দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস-২০২৫ পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির (দুপ্রক) যৌথ উদ্যোগে জাতীয় ও দুদকের পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও পায়রা উড়ানো, বর্ণাঢ্য র্যালি, মানববন্ধন, দুর্নীতিবিরোধী শপথ এবং আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাঠানো সংবাদদাতাদের তথ্যের ভিত্তিতে বিস্তারিত প্রতিবেদন
সিরাজগঞ্জ: জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম। পরে এক বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বলেন, দেশের উন্নয়নের প্রধান প্রতিবন্ধকতা দুর্নীতি। এই ব্যাধি নির্মূলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
নীলফামারী: জেলা প্রশাসন, দুদক ও সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) আয়োজনে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, “দুর্নীতিবাজদের প্রকাশ্যে ঘুষখোর বলতে হবে। দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন জোরদার করার মাধ্যমেই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে বেলুন উড়িয়ে দিবসের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান। পরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি বলেন, দুর্নীতি দমনে শুধু আইন প্রয়োগ নয়, সামাজিক সচেতনতা ও নৈতিক মূল্যবোধ গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।
পটুয়াখালী: জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন ও পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী। পরে মানববন্ধন ও একটি বাইসাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
চুয়াডাঙ্গা: জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে কর্মসূচির সূচনা হয়। পরে প্রধান সড়কে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেনের উপস্থিতিতে বক্তারা বলেন, দুর্নীতি রাষ্ট্রের শিকড়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে। আগামী প্রজন্মকে শুদ্ধতার পথে এগিয়ে নিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বস্তরের ঐক্য প্রয়োজন।
ভালুকা (ময়মনসিংহ): উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেনের নেতৃত্বে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম): উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে র্যালি ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের জাগরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): ইউএনও মাহমুদুল হাসানের উপস্থিতিতে প্রেস ক্লাব চত্বরে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা হয়। বক্তারা দুর্নীতিকে জাতীয় ব্যাধি হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
পবা (রাজশাহী): ইউএনও আরাফাত আমান আজিজ বলেন, দুর্নীতি শুধু রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন ব্যাহত করে না, এটি সামাজিক ন্যায়বিচারকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। সভায় দুর্নীতিবিরোধী শপথ পাঠ করানো হয়।
শান্তিগঞ্জ ও তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ): শান্তিগঞ্জে ইউএনও সুকান্ত সাহা এবং তাহিরপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহরুখ আলম শান্তনুর নেতৃত্বে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তারা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
খালিয়াজুরী (নেত্রকোনা): ইউএনও নাদিম হোসেন শামীম বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রথম শর্ত হলো নিজের অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল থাকা। ব্যক্তিগত সততাই সামগ্রিক শুদ্ধতার ভিত্তি।
ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম): ইউএনও শাহাদাৎ হোসেনের নেতৃত্বে বর্ণিল র্যালি শহর প্রদক্ষিণ করে। তিনি বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ একটি সামাজিক চর্চার বিষয়।
মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট): ইউএনও মো. হাবিবুল্লাহর নেতৃত্বে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সততা সংঘের সদস্যরা পৃথক ব্যানার নিয়ে অংশ নেন।
বিয়ানীবাজার (সিলেট): ইউএনও উম্মে হাবিবা মজুমদার বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স বজায় রাখা হবে। দুর্নীতি একটি জাতিকে ধ্বংস করে দেয়।
মাধবপুর (হবিগঞ্জ): ইউএনও মো. জাহিদ বিন কাশেমের সভাপতিত্বে এবং বিআরডিবি কর্মকর্তার সঞ্চালনায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি পৌর শহর প্রদক্ষিণ করে।
আটঘরিয়া (পাবনা): ইউএনও মিনহাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে র্যালি ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়া ফরিদপুরের সালথায় ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং জামালপুরের বকশীগঞ্জে ভারপ্রাপ্ত ইউএনও আসমা-উল-হুনসার নেতৃত্বে র্যালি ও আলোচনা সভার মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়।
সকল আলোচনা সভায় বক্তারা একমত পোষণ করেন যে, দুর্নীতি সমাজ ও রাষ্ট্রের অগ্রগতির প্রধান বাধা। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে এবং সচেতনতা ও নৈতিকতার চর্চার মাধ্যমেই একটি শুদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব।




Comments