Image description

এশিয়া কাপের অঘোষিত সেমিফাইনালে ১৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়ে ১১ রানের ব্যবধানে হেরে ফাইনালের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। পাকিস্তানের দেওয়া ১৩৬ রানের টার্গেটে বাংলাদেশ থেমেছে ২০ ওভারে ১২৪/৯ রানে। এই জয়ে পাকিস্তান ভারতের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের মুখোমুখি হবে তারা।

টস ও সিদ্ধান্ত: বাংলাদেশের বোলিং পছন্দ

টস জিতে বাংলাদেশ প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। নিয়মিত অধিনায়ক লিটন দাস ফিট না হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন জাকের আলী। একাদশে পরিবর্তন আনা হয়; ফিরেছেন শেখ মেহেদী, তাসকিন আহমেদ ও নুরুল হাসান, বাদ পড়েছেন সাইফউদ্দিন, নাসুম আহমেদ ও তানজিদ হাসান।

বাংলাদেশ একাদশ: সাইফ হাসান, পারভেজ হোসেন, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী (অধিনায়ক), শামীম হোসেন, নুরুল হাসান, রিশাদ হোসেন, শেখ মেহেদী হাসান, তানজিম হাসান, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান।
পাকিস্তান একাদশ: শাহেবজাদা ফারহান, ফখর জামান, সাইম আইয়ুব, সালমান আগা (অধিনায়ক), হুসেইন তালাত, মোহাম্মদ হারিস (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ নওয়াজ, ফাহিম আশরাফ, শাহীন আফ্রিদি, হারিস রউফ, আবরার আহমেদ।

পাকিস্তানের ইনিংস: শুরুতে ধাক্কা, শেষে প্রতিরোধ

বাংলাদেশের বোলাররা শুরুতেই পাকিস্তানকে চাপে ফেলে। প্রথম ওভারে তাসকিন আহমেদ শাহেবজাদা ফারহানকে (৪) ফিরিয়ে টি-টোয়েন্টিতে নিজের শততম উইকেট নেন। দ্বিতীয় ওভারে মেহেদী হাসান সাইম আইয়ুবকে (০) রিশাদের হাতে ক্যাচ বানান। পাওয়ার প্লে’র শেষে পাকিস্তানের স্কোর ছিল ২৭/২।

সপ্তম ওভারে রিশাদ হোসেন ফখর জামানকে (২০ বলে ১৩) ফিরিয়ে পাকিস্তানকে ২৯/৩-এ ফেলেন। নবম ওভারে হুসেইন তালাত (৩) রিশাদের দ্বিতীয় শিকার হলে পাকিস্তান ৩৩/৪-এ নেমে আসে। মোস্তাফিজুর রহমান অধিনায়ক সালমান আগাকে (১৯) উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে পঞ্চম উইকেট তুলে নেন।

১৩.৩ ওভারে তাসকিন শাহীন আফ্রিদিকে (১৩ বলে ১৯, ২ ছক্কা) ফিরিয়ে পাকিস্তানকে ৭১/৬-এ ফেলেন। তবে মোহাম্মদ হারিস (২৩ বলে ৩১, ২ চার, ১ ছক্কা) ও মোহাম্মদ নওয়াজ (১৫ বলে ২৫) ৩৮ রানের জুটি গড়ে দলকে টেনে নেন। মেহেদী হারিসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেও শেষ ওভারে ১১ রান যোগ করে পাকিস্তান ১৩৫/৮-এ পৌঁছায়।

বোলিং ফিগার: তাসকিন ৪-০-২৮-৩, রিশাদ ৪-০-১৮-২, মেহেদী ৪-০-২৮-২, মোস্তাফিজ ৪-০-৩৩-১।

বাংলাদেশের ব্যাটিং: দায়িত্বজ্ঞানহীন পতন

১৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশ শুরুতেই ধাক্কা খায়। প্রথম ওভারে শাহীন আফ্রিদি পারভেজ হোসেনকে (০) ফিরিয়ে দেন। ৪.২ ওভারে তাওহীদ হৃদয় (৫) শাহীনের দ্বিতীয় শিকার হন। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে হারিস রউফ সাইফ হাসানকে (১৫ বলে ১৮, ১ চার, ২ ছক্কা) ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ২৯/৩-এ ফেলেন। তবে পাওয়ার প্লে’তে ৩৬ রান ওঠে।

মেহেদী হাসান (১০ বলে ১১) মোহাম্মদ নওয়াজের বলে আউট হলে ৪৪/৪। নুরুল হাসান সোহান (২১ বলে ১৬, ১ ছক্কা) সাইম আইয়ুবের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে ৬৩/৫। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক জাকের আলী (৯ বলে ৫) অবিবেচকের মতো ক্যাচ তুলে ফিরলে বাংলাদেশ ৭৩/৬-এ নেমে আসে।

শামীম হোসেন (২৫ বলে ৩০, ২ ছক্কা) প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ১৬.৫ ওভারে শাহীন আফ্রিদির বলে হুসেইন তালাতের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে ৯৭/৭-এ জয়ের আশা ক্ষীণ হয়। ১৮তম ওভারে হারিস রউফ তানজিম হাসান (১০) ও তাসকিন আহমেদকে (৪) বোল্ড করে বাংলাদেশকে ১০১/৯-এ ফেলেন। শেষে মোস্তাফিজ (৬*) ও রিশাদ (১৬*) অপরাজিত থাকলেও ১২৪ রানে থেমে যায় ইনিংস।

পাকিস্তানের বোলিং: শাহীন আফ্রিদি ৪-০-২৫-২, হারিস রউফ ৪-০-২২-২।

ফাইনালে ভারত-পাকিস্তান লড়াই

বাংলাদেশের বোলিং শুরুতে দুর্দান্ত ছিল, কিন্তু ব্যাটিংয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন পারফরম্যান্স তাদের স্বপ্ন ভেঙে দেয়। পাকিস্তান এই জয়ে ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে। এই আসরে তৃতীয়বারের মতো ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ে শিরোপার হাতছানি।