পরশুরামে কাপ্তান বাজারে স্লুইস গেট; ১৫ গ্রামের মানুষের গলার কাঁটা

ফেনীর পরশুরামে কাপ্তান বাজারে কহুয়া নদীর স্লুইস গেটটি ১৫ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে স্লুইস গেটটি কাজ করছে না। প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষিজমি, ভেঙ্গেছে বেড়িবাঁধ।
সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, ২০০৪-০৫ অর্থবছরে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এই প্রকল্পের অধীনে ১২২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ ও বিভিন্ন স্থানে স্লুইসগেট নির্মাণ করা হয়। উপজেলার বক্সমাহমুদ- ছাগলনাইয়া সড়কে খন্ডলহাই বাজারের উত্তর পাশে বয়ে গেছে কহুয়া নদী। কহুয়া নদীতে এসে মিশেছে ভারত থেকে নেমে আসা মতাই ছড়া খাল।পশ্চিম বাগমারা গ্রামের কহুয়া নদী ও মতাই ছড়া খালের সংযোগস্থলে ২০০৫ সালে প্রকল্পের মাধ্যমে স্লুইস গেটটি নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এই স্লুইস গেইট নির্মান করায় কারোর এক টাকার উপকার হয় নি। বরং ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে স্লুইসগেটটি নির্মাণের ওয়ার্ক অর্ডার অনুসরণ করা হয় নি এবং নিম্ন মানের কাজ এবং দুই / তিন নাম্বার মালামাল দেওয়া হয়েছে। তাই ছয় মাসের মধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। আকারে ছোট হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে কহুয়া নদীর পানি দ্রুত নেমে যেতে পারেনা। এক সময় এটি অকেজো হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন এটি অকেজো থাকায় মরিচা ধরে গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রয়োজনের তুলনায় স্লুইসগেটটি একেবারে ছোট। বন্যা শুরু হলে নরনীয়া,কেতরাঙ্গা, পশ্চিম বাগমারা,পূর্ব বাঘমারা, জমিয়ারগাঁও, গুথুমা ও চারিগ্রামের পানি মতাই ছড়া খাল হয়ে কহুয়া নদীতে এসে পড়ে। স্লুইস গেটটি সরু হওয়ায় পানি স্বাভাবিকভাবে নদীতে না পড়ে আটকে থাকে। ফলে এসব গ্রামের জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্লুইস গেটটি অকেজো থাকায় ইরি মৌসুমে মতাই ছড়া খালে পানি ধরে রাখা যায় না। খালে পানি না থাকায় জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব হয় না।
পূর্ব বাগমারা গ্রামের বাসিন্দা ওমর ফারুক টিপু মানবকন্ঠকে বলেন, নির্মাণের পর থেকে স্লুইস গেটটি নষ্ট হয়ে আছে অভিযোগ করে বলেন, শুকনো মৌসুমে পানি ধরে রাখা যায় না।বন্যার সময় লোকালয়ে পানি চলে আসে। এটি বড় পরিসরে নির্মাণ করা হলে কৃষক ও মানুষ উপকৃত হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মানবকন্ঠকে জানান, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে স্লুইসগেটটি কোন কাজে আসছে না। এটি মেরামত করা প্রয়োজন।
জমিয়ারগাঁওয়ের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম মানবকন্ঠকে জানান, মতাই ছড়া খালটি দীর্ঘদিন খনন না করায় ভরাট ও সরু হয়ে গেছে। ফলে বোরো মৌসুমে খালে পানি কম থাকায় কৃষকরা অনেক জমি চাষাবাদ করতে পারেন না। স্লুইসগেট ছোট হওয়ায় অল্প বৃষ্টিতেই বাগমারা ও জমিয়ারগাঁওসহ অনেকগুলো গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইউসুফ আহমেদ স্লুইসগেট অকেজো হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করে জানান, পাউবোর মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট যান্ত্রিক ত্রুটি চিহ্নিত করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে।
Comments