Image description

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের রাকুদিয়া গ্রামের তরুণরা স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছেন। বুধবার (১ অক্টোবর) সকালে দক্ষিণ রাকুদিয়ার এই উদ্যোগে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক থেকে বোর্ড স্কুল প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের ময়লা-আবর্জনা ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হয়। এলাকার পরিবেশ রক্ষা ও রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধির এই কার্যক্রম স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।

সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে প্রায় ২০ জন তরুণ অংশ নেন। কেউ ময়লা-আবর্জনা টুকরিতে ভরছেন, কেউ রাস্তার পাশের ঝোপঝাড় কেটে পরিষ্কার করছেন। রাকুদিয়া ৪ নং ওয়ার্ডের আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে দক্ষিণ দিকে প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত এই রাস্তাটি তিনটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। এছাড়া রাস্তার পাশে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদ ও একটি মাদরাসা রয়েছে। স্থানীয় মুদি দোকান ও ঝোপঝাড়ের কারণে রাস্তাটি কিছুটা সংকুচিত হয়ে পড়েছিল, যা যাতায়াতে অসুবিধার কারণ হচ্ছিল।

এই কার্যক্রমের মূল উদ্যোক্তা স্থানীয় তরুণ এইচ এম রিয়াজ মাহমুদ। তিনি এলাকার পরিবেশ ও রাস্তার অবস্থা নিয়ে চিন্তিত হয়ে এই উদ্যোগ নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি এলাকার অন্য তরুণদের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করেন, এবং সবাই মিলে এই কার্যক্রমে অংশ নেন। রাকুদিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আলমগীর হোসেন, যিনি এই উদ্যোগের অন্যতম সংগঠক, বলেন, “রাকুদিয়া এলাকায় একটি বাজার ও তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এলাকার ঐতিহ্য ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আমরা এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করেছি। এটি আমরা অব্যাহত রাখব।”

স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান শিকদার বলেন, “তরুণদের এই উদ্যোগে রাস্তাটি এখন ঝকঝকে ও সুন্দর দেখাচ্ছে। অতীতে এভাবে কেউ পরিষ্কার করেনি। পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এভাবে এগিয়ে আসা উচিত।” দেহেরগতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “একত্রে কাজ করলে যে কোনো কাজ সহজে সম্পন্ন করা সম্ভব। রাকুদিয়ার তরুণরা তা প্রমাণ করেছে। তাদের এই কাজ প্রশংসনীয়। সবাইকে নিজ নিজ এলাকার রাস্তাঘাট পরিষ্কারে এগিয়ে আসা উচিত। এতে দেশ এগিয়ে যাবে।”

এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুধু একদিনের জন্য নয়। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এ ধরনের কার্যক্রম তারা নিয়মিত চালিয়ে যাবেন। এলাকার পরিবেশ রক্ষা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি স্থানীয়দের মাঝে সচেতনতা তৈরি করাই তাদের লক্ষ্য।

রাকুদিয়ার তরুণদের এই প্রশংসনীয় উদ্যোগ অন্যান্য এলাকার জন্যও একটি দৃষ্টান্ত হতে পারে। স্থানীয়দের এমন উদ্যোগ দেশের পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।