Image description

ঢাকের তালে উচ্ছ্বাস, শঙ্খধ্বনি আর আরতির সুরে মুখরিত হবিগঞ্জের মাধবপুর। শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ সময়ে উৎসবের আমেজে জমে উঠেছে উপজেলার ১১৩টি পূজামণ্ডপ। ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড়ে মণ্ডপগুলো এখন সরগরম।

উৎসবের রঙে মাধবপুর

বুধবার (১ অক্টোবর) রাতে উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী মানুষের উপচে পড়া উপস্থিতি। কেউ দেবীর চরণে প্রণাম জানাচ্ছেন, কেউ মেতে উঠেছেন আলাপ-আড্ডায়। চারপাশে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। মণ্ডপগুলোতে আলোকসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উৎসব আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।

কঠোর নিরাপত্তায় নির্বিঘ্ন উৎসব

শান্তিপূর্ণ উৎসব নিশ্চিত করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, উপজেলা প্রশাসন ও মাধবপুর থানা পুলিশ যৌথভাবে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। এছাড়া নিয়মিত টহল ও চেকপোস্টের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ বিন কাসেম জানান, “হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে উপজেলার ১১৩টি পূজামণ্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালিত হচ্ছে।”

ভক্তদের আনন্দ-অনুভূতি

স্থানীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জানান, “এবারের পূজা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পালিত হচ্ছে। ভক্ত ও দর্শনার্থীদের অংশগ্রহণ আগের তুলনায় অনেক বেশি।”

দর্শনার্থী দীপা রানী বলেন, “মায়ের চরণে প্রার্থনা করেছি যেন পরিবারে শান্তি থাকে, দেশ ভালো থাকে। পূজার এই উৎসব আমাদের সবাইকে একত্রিত করে।”

সম্প্রীতির উৎসব

দুর্গোৎসব শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি সামাজিক সম্প্রীতিরও এক মিলনমেলা। পূজামণ্ডপগুলোতে হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি মুসলিম, খ্রিষ্টানসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এই সম্প্রীতির চিত্র মাধবপুরের দুর্গোৎসবকে আরও উজ্জ্বল করেছে।

বিদায়ের প্রস্তুতি

আগামীকাল (২ অক্টোবর) সিঁদুর খেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। দেবীর বিদায়ের মুহূর্তে থাকবে নতুন প্রত্যাশার বার্তা—অশুভ শক্তির বিনাশ আর শুভ শক্তির জয়।

মাধবপুরের এই উৎসব শুধু ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি সামাজিক ঐক্য ও সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।