১৬ ঘণ্টার যানজট শেষে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে স্বস্তি

দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার তীব্র যানজট ও অবর্ণনীয় দুর্ভোগের পর অবশেষে স্বাভাবিক হয়েছে দেশের ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যান চলাচল। শারদীয় দুর্গোৎসবের ছুটি, ভোরবেলার বৃষ্টি এবং পথে যানবাহন বিকল হওয়ার কারণে সৃষ্ট যানজট বুধবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যা নাগাদ পুরোপুরি কেটে যায়। বিশেষ করে মেঘনা টোলপ্লাজা এলাকায়, যেখানে যানজটের কেন্দ্রবিন্দু ছিল, সেখানে যান চলাচল এখন স্বাভাবিক।
হাইওয়ে পুলিশ ও যাত্রীদের সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোর ৩টার দিকে কিছু গাড়ির চালক ঘুমিয়ে পড়ায় যানজটের সূত্রপাত হয়। সকালে শারদীয় দুর্গোৎসবে ঘরমুখো মানুষের চাপ বাড়লে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে শনির আখড়া থেকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের লাঙ্গলবন্দ সেতু পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে রূপসী পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।
যানজটের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছায়। সাধারণত সাইনবোর্ড থেকে মেঘনা টোলপ্লাজা পার হতে আধা ঘণ্টা লাগলেও এদিন যাত্রীদের তিন থেকে চার ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়। শিমরাইল এলাকায় আটকে থাকা ট্রাকচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, “শনির আখড়া থেকে দশ মিনিটের পথ আসতে আমার দেড় ঘণ্টা লেগেছে। দাউদকান্দি পৌঁছাতে মনে হয় সন্ধ্যা হয়ে যাবে।”
সিলেটগামী যাত্রী আল আমিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সকাল থেকে বাসে বসে আছি, এখনো নরসিংদী পার হতে পারিনি। যানজটের কারণে রাস্তায়ই ছুটির অর্ধেক সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে।”
যানজটের প্রভাব পড়ে বাস কাউন্টারগুলোতেও। সময়মতো বাস ছাড়তে না পারায় কাউন্টারে যাত্রীদের ভিড় বাড়ে। একাধিক পরিবহনের সুপারভাইজার জানান, বাসগুলো গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় ফিরতি যাত্রার সময়সূচিতেও বিপর্যয় ঘটে।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জানান, “পূজার ছুটিতে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ এবং বৃষ্টির কারণে সকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। তবে হাইওয়ে পুলিশের তৎপরতায় গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। এখন গাড়ি আর থেমে নেই, ধীরে ধীরে চলছে।”
তিনি আরও জানান, যানজট পুরোপুরি নিরসনের জন্য মহাসড়কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দিনভর ভোগান্তির পর সন্ধ্যার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় ঘরমুখো মানুষ ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন।
Comments