
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বসতঘরে গ্যাস লিকেজ থেকে সৃষ্ট বিস্ফোরণে একই পরিবারের নারী ও শিশুসহ চারজন দগ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত এক শিশুকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক ধারণা, গ্যাস লিকেজের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটলেও সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে তদন্ত চলমান রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (১ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মর্ডাণ রোডে অবস্থিত রাহাত মঞ্জিলের দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে। দগ্ধরা হলেন ফ্ল্যাটের ভাড়াটে কুমোদ চন্দ্র নাথ (৪৩), তার স্ত্রী সবিতা রানী নাথ (৩২), মেয়ে ঐর্দিকা (৮) এবং ছেলে তূর্য (৪)।
কুমোদ চন্দ্র নাথ জানান, সন্ধ্যার দিকে তারা দুর্গাপূজার অনুষ্ঠানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বিকট শব্দের সঙ্গে ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বলেন, “আমরা পূজার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ ঘরের মধ্যে একটা বিকট শব্দ হলো। এরপর দেখি ঘরের বিভিন্ন কক্ষে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। আমি, আমার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে দগ্ধ হয়েছি।” তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তবে তার মেয়ে ঐর্দিকার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ফ্ল্যাটের আসবাবপত্রসহ বেশ কিছু মালামাল পুড়ে গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাইন উদ্দিন জানান, ঐর্দিকার শরীরের ২০ শতাংশ, তূর্যের ১০ শতাংশ এবং কুমোদ চন্দ্র ও সবিতা রানীর ২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় ঐর্দিকাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার মো. আব্দুল মালেক জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুপুরে রান্নার পর গ্যাসের লাইন বন্ধ করলেও সুইচ থেকে ধীরে ধীরে গ্যাস লিক হয়ে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। পরে পূজার জন্য মোমবাতি জ্বালানোর সময় বিস্ফোরণ ঘটে। তিনি বলেন, “তদন্ত শেষে বিস্ফোরণের সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গ্যাস লিকেজের মতো দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতা ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা।
Comments