Image description

সীমান্তের বেড়া পেরিয়ে প্রিয়জনের শেষ বিদায় নেওয়ার আকুতি এবার পূরণ হলো মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্তে। বেনাপোল সীমান্তে ভারতের বাশঘাটা গ্রামের বাসিন্দা জব্বার মন্ডলের (৭৫) মৃত্যুর পর তার বাংলাদেশে বসবাসরত মেয়ে মিতু মন্ডলের শেষবারের মতো পিতার মুখ দেখার ইচ্ছা পূরণে এগিয়ে এসেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

গত মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানার বাশঘাটা গ্রামের সাবেক অঞ্চল প্রধান জব্বার মন্ডল। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে বাংলাদেশে থাকা মেয়ে মিতু মন্ডল ও জামাই বাবলু মন্ডল শেষবারের মতো তার মরদেহ দেখতে চান। কিন্তু পাসপোর্ট-ভিসার বাধা আর সীমান্তের কঠোর নিয়মের কারণে তাদের ইচ্ছা পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে বিজিবি ও বিএসএফের সমন্বিত উদ্যোগে সীমান্তের শূন্যরেখায় এই আকুতি পূরণের ব্যবস্থা করা হয়।

বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে যশোরের বেনাপোল ধান্যখোলা কোম্পানির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার মেইন পিলার-২৫/৬-এস সংলগ্ন সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এই মানবিক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। বিজিবির ধান্যখোলা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মো. সেলিম মিয়ার নেতৃত্বে ৫ জন সদস্য এবং বিএসএফের পক্ষে এ.সি. সঞ্জয় কুমার রায়, কোম্পানি কমান্ডার (সি কোম্পানি, মোস্তফাপুর, ৬৭ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন) ও তার ৫ জন সদস্য এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মিতু মন্ডলসহ আত্মীয়রা সীমান্তের শূন্যরেখায় পিতার মরদেহ দেখেন। এই হৃদয়স্পর্শী মুহূর্তে উপস্থিত স্বজনরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। পরে মরদেহটি দাফনের জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং মিতু ও তার আত্মীয়রা বাংলাদেশে ফিরে আসেন।

বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সীমান্তে দায়িত্ব পালন শুধু নিরাপত্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, মানবিক প্রয়োজনে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী সবসময় একসঙ্গে কাজ করে। এই ঘটনাকে স্থানীয় বাসিন্দারা মানবিকতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রশংসা করেছেন এবং বিজিবি ও বিএসএফের এমন উদ্যোগের জন্য সাধুবাদ জানিয়েছেন।