Image description

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় ওএমএস (খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি) চাল বিতরণে অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ৯নং ভোলাকোট ইউনিয়নের নাগ-রাজারামপুর এলাকার ডিলার ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সেক্রেটারি নূরনবীর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত দামে চাল বিক্রি এবং গুদাম থেকে গোপনে চাল সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগের বিস্তারিত

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর (বুধবার) সরকার নির্ধারিত মূল্য ৪৫০ টাকা প্রতি বস্তা চালের পরিবর্তে ডিলার নূরনবী ৪৮০ টাকায় চাল বিক্রি করেন। এছাড়া, চাল বিক্রির জন্য নির্ধারিত সময় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা হলেও তিনি দুপুর ১১টার পরই বিক্রি বন্ধ করে দেন। এতে করে অনেক দরিদ্র ক্রেতা চাল কিনতে ব্যর্থ হন।

এরপর শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের সময় নূরনবী গুদাম থেকে গোপনে চাল সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়রা চালবোঝাই একটি গাড়ি আটক করে এবং ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করে। তিন দিন পর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে।

অভিযুক্তের বক্তব্য

অভিযোগের বিষয়ে নূরনবী দাবি করেন, দোকানের শাটার নষ্ট হওয়ায় তিনি পাশের একটি দোকানে চাল স্থানান্তরের চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলেন, “একটি কুচক্রী মহল আমার সম্মানহানি করতে ভিডিওটি তৈরি করেছে।” তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে ওই স্থান থেকেই চাল বিক্রি করা হয়েছে এবং উদ্বৃত্ত পাঁচ বস্তা চাল সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।

দলীয় ও প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া

রামগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ঘটনাটির বিষয়ে বলেন, “এটি তদন্তসাপেক্ষে দেখা হবে। দলের নাম ব্যবহার করে কাউকে কোনো অপকর্ম করতে দেওয়া হবে না।”

রামগঞ্জ উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা জানান, অভিযোগটি তার কাছে পৌঁছেছে। তবে সরকারি ছুটির কারণে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, “অফিস খোলার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম রবিন শীষ বলেন, “খাদ্য কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দ্রুতই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়দের ক্ষোভ

ওএমএস কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে চাল বিতরণের উদ্দেশ্য থাকলেও এ ধরনের অনিয়মের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দ্রুত তদন্ত ও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

এ ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। অনেকে মনে করছেন, এ ধরনের ঘটনা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করে দিচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা করছে এলাকাবাসী।