জামায়াতের এমপি পদপ্রার্থীর সাথে আ'লীগ নেতার ছবি নিয়ে তোলপাড়

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় জামায়াতে ইসলামীর এমপি পদপ্রার্থীর সাথে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গত শুক্রবার (৩ অক্টোবর) উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নে একটি দাওয়াতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। ছবিটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের দৌলতপুর কাজীবাড়ী এলাকায় আবদুল্লাহ আল মামুনের নামের একই জামায়াত কর্মীর ঘরে দাওয়াতে অংশ নেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ও দক্ষিণ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান চৌধুরী। সেখানে জুমার নামাজ আদায় করেন এবং আসাযাওয়ার সময় বিভিন্নজনের সাথে কুশল বিনিময় করেন তিনি। ওইসময় বড়উঠান ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সায়েদ আল মাহমুদের সাথে হেঁটে যাওয়ার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার রাত থেকে এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
অভিযোগ রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ নেতা সায়েদ আল মাহমুদ অবস্থান নেওয়া ছাড়াও ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে জুলাই আন্দোলনকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক মন্তব্য শেয়ার করেন।
উপজেলা বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন, নিজেদের স্বার্থে পতিত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের নেতাদের ফেরাতে জামায়াত ইসলামী মাঠে নেমেছে। এনসিপি নেতারা এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
ক্ষমতার লোভে দীর্ঘদিনের রাজপথের সহযোগীদের এত অধঃপতন দেখাটা লজ্জাজনক জানিয়ে কর্ণফুলী উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক জাহেদুল ইসলাম শামীম প্রশ্ন তুলেন, ‘জুলাই আন্দোলন নিয়ে প্রকাশ্যে কটূক্তিকারী আওয়ামীলীগের সভাপতিকে নিয়ে জামাতের প্রার্থী কিভাবে গণসংযোগ করছেন?’
এঘটনায় কর্ণফুলী উপজেলা জাতীয় নাগরিক পার্টি যুগ্ম সমন্বয়কারী ইমরান হোসেন তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, ‘স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের এক ওয়ার্ড সভাপতির সাথে চট্টগ্রাম ১৩ আসনের জামায়াত প্রার্থীর এমন প্রকাশ্য সখ্যতা সত্যিই লজ্জাজনক ও রাজনৈতিক অনৈতিকতার চরম উদাহরণ। ছাত্র-জনগণের রক্ত-ঘামে অর্জিত গণতন্ত্রকে এভাবে কলুষিত করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি কর্ণফুলী এই অনৈতিক আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই এবং জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।’
জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামী কর্ণফুলী উপজেলা শাখার আমীর মনির আবছার চৌধুরী বলেন, আমরা দলের প্রার্থীসহ বড়উঠানে একটি পারিবারিক দাওয়াতে গিয়েছিলাম। ওই দাওয়াতে যান প্রতিবেশীরাও। সেখানে আমাদের দলীয় প্রার্থীর সাথে লোকজনের দেখা হলে তাঁরা কথা বলেন। সেখানে ছবি তুলে তিলকে তাল বানিয়ে দিল। এটি আসলে ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছু নয়।
এবিষয়ে বড়উঠান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ২নং ওয়ার্ডের সভাপতি সায়েদ আল মাহমুদ বলেন, জুমার নামাজে যাওয়ার সময় পথে দেখা হয় জামায়াতের সংসদ সদস্য প্রার্থীর সাথে। উনার সাথে আমার ভাতিজা জামাত নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন। ওইসময় কে বা কারা ছবি তুলে সেটাকে পুঁজি করে রাজনীতি করছে।
Comments