ঐক্য ভাঙলে কারও মঙ্গল নয়, অপরাধীদের ঠাঁই নেই বিএনপিতে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে বর্তমানে নানা ষড়যন্ত্র চলছে এবং বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। যারা এই বিভেদে জড়িত, তারা কারও মঙ্গল করছে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আলোচনা ও মতবিনিময় হতে পারে, কিন্তু বিতর্ক ও বিভেদে জড়ানো যাবে না। ঐক্য হারালে আন্দোলনের অগ্রগতি থেমে যাবে। বিভাজন কারও জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না।” তাই তিনি দলের ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান জানান।
শনিবার (১১ অক্টোবর, ২০২৫) দুপুরে গাজীপুর মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ভাওয়াল রাজবাড়ী মাঠে নতুন সদস্য সংগ্রহ ও ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী অভিযোগ করেন, “অনেক সুরঙ্গ খোঁড়া হচ্ছে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে গভীর চক্রান্ত চলছে, যার লক্ষ্য ৫ আগস্টের অর্জন ব্যর্থ করা।”
তিনি বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠরা রাষ্ট্রীয় সম্পদ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। সাধারণ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা। ঢাকা ও গাজীপুরে সবজির দাম চাঁদাবাজি ও হাতবদলের কারণে বাইরের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি।” তিনি অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এবং সতর্ক করে বলেন, চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে এবং দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।
রিজভী আরও বলেন, “ড. মুহাম্মদ ইউনুস একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গুণীজন। কিন্তু তার সময়ে চাঁদাবাজি বা কলকারখানা বন্ধের কথা ছিল না। এখন কেন শতাধিক কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে? কেন আড়াই লাখ শ্রমিক কর্মহীন হচ্ছে? এটাই জনগণের প্রশ্ন।” তিনি অভিযোগ করেন, যারা ২৪ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে এবং পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ নিয়েছে, তাদের ধানমন্ডিতে আগে থেকেই বাড়ি ছিল। জনগণ এখন এসব থেকে মুক্তি চায়।
বিএনপির নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিএনপি এমন একটি দল, যেখানে সৎ, পরিশ্রমী ও জনবান্ধব মানুষ স্থান পাবেন। সন্ত্রাসী, অপকর্মে লিপ্ত বা আতঙ্ক সৃষ্টিকারীরা বিএনপির সদস্য হতে পারবে না। শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র ও পেশাজীবীদের দলে চাই, কিন্তু অপরাধী, ফ্যাসিস্ট বা আওয়ামী লীগের জন্য বিএনপিতে কোনো জায়গা নেই।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিম রনি। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুল ইসলাম, ড. মাজহারুল আলম, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি জাকির হোসেন নান্নু, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডাক্তার তৌহিদুর রহমান আউয়ালসহ মহানগর বিএনপির অসংখ্য নেতা-কর্মী।
অনুষ্ঠানে রিজভী নতুন সদস্যদের হাতে সদস্য ভর্তি ফরম তুলে দেন এবং বিভিন্ন থানা কমিটির হাতে ফরম বুঝিয়ে দেন। অনুষ্ঠান শেষে তিনি চিলাই নদীতে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন।
Comments