Image description

চট্টগ্রাম বন্দর গত অর্থবছরে আয় করেছে ৫ হাজার ২২৭ কোটি টাকা। বিপরীতে ব্যয় করেছে ২ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা। এ হিসাবে বন্দর মুনাফা করেছে ২ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মুনাফা করেছিল ৩ হাজার ৯১২ কোটি টাকা। প্রতি বছর মুনাফা করার পরও ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে নতুন করে বাড়ছে মাশুল। আজ মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে নতুন মাশুল (ট্যারিফ) কার্যকর হবে। এর ফলে বাড়বে ব্যয়, ঝুঁকিতে পড়বে আমদানি-রপ্তানি। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই বাড়তি অর্থ আয়ের জন্য আমদানি-রপ্তানি খাতকে ঝুঁকিতে ফেলছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। তাই আবারও বিষয়টি বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তারা।

বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে মাশুল বাড়ানো হয়েছিল। ৩৯ বছর পর মাশুলের হার বাড়ানো হয়েছে; যা মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে কার্যকর করা হবে। মাশুল বাড়ানোর ফলে যে হারে ভোক্তার ওপর চাপ তৈরি হবে বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, তা ঠিক নয়। এটি ভোক্তা পর্যায়ে তেমন প্রভাব ফেলবে না।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মায়ের্সক শিপিং লাইন ২০ ফুট কনটেইনারে কোম্পানিটি টার্মিনাল হ্যান্ডলিং চার্জ ১২০ ডলার করে আদায় করা হলেও মাশুল কার্যকর হওয়ার পরপরই ১৬০ ডলার করে আদায়ের ঘোষণা দিয়েছে। এ হিসাবে প্রতিটি কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ব্যয় বাড়বে ৪৫ ডলার। আর ৪০ ফুট লম্বা কনটেইনারে এই চার্জ ২০৫ থেকে বাড়িয়ে ৩১০ ডলার করা হয়েছে। এর আগে একইভাবে চার্জ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে রেখেছে সিএমএ, সিজিএম, সিএনসি ও এএনএল। 

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কনটেইনার শিপিং অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ফাইয়াজ খন্দকার বলেন, মাশুল বাড়ানোর ফলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিদেশি অপারেটররা যেহেতু বন্দরের টার্মিনাল পরিচালনা করছে, স্বাভাবিকভাবে তারা চাইবে ট্যারিফ বাড়িয়ে দেওয়া হোক। আমদানি-রপ্তানিতে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সেটি আমলে নেওয়া হয়নি। এজন্য আমরা চাই, এ ধরনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও প্রিমিয়ার সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক বলেন, বিদেশি অপারেটরদের সুবিধা দিতেই চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল বাড়ানো হয়েছে। মাশুল বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের যুক্তিসংগত চাওয়ার বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে। এই মাশুল আমদানি-রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। শেষ পর্যন্ত এটি ভোক্তার ঘাড়েই চাপবে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব বলেন, বন্দরের মাশুল বাড়ানোর আগে আলোচনা করা হয়েছে। বন্দরে সেবার পরিধি বাড়ানো হচ্ছে। নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন নতুন শেড, ইয়ার্ড, টার্মিনালসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এজন্য বন্দরের মাশুল বাড়ানো হয়েছে।