
একসময় শুধু পরিবারের চাহিদা মেটাতে বাড়ির আঙিনায় শখের বসে পেঁপে চাষ করা হতো। এখন সেই পেঁপেই হয়ে উঠেছে লাভজনক বাণিজ্যিক ফসল। মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কৃষক ও উদ্যোক্তারা এখন পেঁপে চাষে নতুন সম্ভাবনা দেখছেন।
শিবচর উপজেলার দ্বিতীয় খণ্ড ইউনিয়নের কাচাই মাদবর কান্দি এলাকার কৃষি উদ্যোক্তা মো. মনির হোসেন ৪৫ শতক জমিতে রোপণ করেছেন ৩৮০টি শাহী জাতের পেঁপে চারা। বর্তমানে সারি সারি সবুজ গাছে ঝুলছে ছোট-বড় ফল, অনেক গাছে আবার দেখা যাচ্ছে পাকা পেঁপে। প্রতিটি পেঁপের ওজন ২ থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত। সঠিক পরিচর্যা ও যত্নে বাগানজুড়ে এখন ফলের সমারোহ।
পেঁপে চাষের অভিজ্ঞতা জানিয়ে মনির হোসেন বলেন, পুরো বাগান করতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত কয়েক দফায় এক লাখ টাকার বেশি বিক্রি করেছি। মৌসুম শেষে আরও অন্তত এক লাখ টাকার পেঁপে বিক্রির আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, অন্য ফসলের তুলনায় পেঁপে চাষে খরচ কম, কিন্তু লাভ বেশি। এখন পাইকাররা সরাসরি বাগান থেকে পেঁপে কিনে নিচ্ছে, ফলে বাজারে যাওয়ার ঝামেলাও নেই।
মনির হোসেনের এ সফলতা দেখে আশপাশের অনেক কৃষকই পেঁপে চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিঠুন সাহা বলেন, মনির হোসেনকে শুরু থেকেই নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে পুষ্টিকর এই ফল চাষ করে সত্যিই ভাগ্য বদলে ফেলা সম্ভব। তার সাফল্য অন্য কৃষকদেরও অনুপ্রেরণা দেবে।
শিবচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে উপজেলায় প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হচ্ছে ভান্ডারীকান্দি ইউনিয়নে। শাহী ও রেড লেডি জাতের পেঁপে রোগ প্রতিরোধী ও উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় কৃষকরা এখন এসব জাতের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, আশ্বিন ও পৌষ মাস পেঁপের বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। বপনের ৪০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে চারা রোপণ করা যায় এবং ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যেই ফল সংগ্রহ সম্ভব।
পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলের বাণিজ্যিক চাষ এখন শিবচরের কৃষকদের নতুন আশার আলো হয়ে উঠেছে।
Comments