২০২৪ সালের ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দিনমজুর সজল নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মুন্সীগঞ্জ শহর ছাত্রলীগের (নিষিদ্ধঘোষিত) সাধারণ সম্পাদক এবং মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন সাগরকে (৩১) ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলি আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুন্সীগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক সজিব দে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমান তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও হত্যার ঘটনায় দায়ের করা একাধিক মামলার আসামি সাজ্জাত হোসেন সাগরকে বুধবার রাতে ঢাকার ডেমরা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার ভোরে তাকে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জানা গেছে, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাগর বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে কোরিয়াতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক হয়ে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। সম্প্রতি কঠোর গোপনীয়তায় দেশে ফিরে তিনি ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ গত এক মাস ধরে তাকে অনুসরণ করে আসছিল এবং বুধবার রাতে তিনি গ্রেফতার হন।

এদিকে সাগরের বিচারের দাবিতে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ফটকে এবং আদালত প্রাঙ্গণে বিএনপি নেতাকর্মী ও ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা প্রিজন ভ্যান লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করে।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে মুন্সীগঞ্জে জড়ো হওয়া হাজার হাজার ছাত্র-জনতার ওপর ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে হামলা চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে সজল মোল্লা, রিয়াজুল ফরাজী ও ডিপজল নিহত হন এবং শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এসব ঘটনায় সাজ্জাত হোসেন সাগরের বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলাসহ অন্তত পাঁচটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে।