Image description

রাজবাড়ী সদর উপজেলার মূলঘর এলাকায় বিদেশফেরত তরুণ মাহবুবুর রহমান মিয়া খুলেছেন এক ব্যতিক্রমধর্মী চায়ের দোকান। দোকানের নাম দিয়েছেন ‘বিসমিল্লাহ তন্দুরি চা’। এই অনন্য স্বাদের চা এখন রাজবাড়ীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চা প্রেমীদের আকর্ষণ করছে।

এই তন্দুরি চা তৈরি হয় খাঁটি গরুর দুধ, চায়ের লিকার, এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গসহ বিশেষ মশলার মিশ্রণে। মাটির কাপে চা পরিবেশনই এর মূল আকর্ষণ। প্রথমে মাটির কাপ গরম চুলায় পোড়ানো হয়, এরপর তাতে চিনি দেওয়া হয়। পরে সেই কাপে দুধ ও লিকার ঢালতেই আগুন ধরে যায়—দৃশ্যটি মনোমুগ্ধকর ও রোমাঞ্চকর।

দোকানটি প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকে, আর সপ্তাহে একদিন, মঙ্গলবার বন্ধ। তন্দুরি চায়ের দাম এক কাপ ৩০ টাকা, আর স্পেশাল তন্দুরি চা ৫০ টাকা, যার সঙ্গে পরিবেশন করা হয় একটি পোড়া রুটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, দোকানের সামনে অপেক্ষমাণ চা প্রেমীদের ভিড়। কেউ বসে, কেউ দাঁড়িয়ে চা বানানোর দৃশ্য উপভোগ করছেন। রাজবাড়ীর শ্রীপুর থেকে আসা কয়েকজন যুবক জানান, “প্রায়ই আমরা এখানে চা খেতে আসি। মাটির কাপে করে চা খেতে বেশ স্বাদ লাগে, আর পোড়ানোর দৃশ্যটা সত্যিই অন্যরকম।”

জেলার পাংশা উপজেলার নাসির নামের এক চা-প্রেমী বলেন, “অনলাইনে এই চা বানানোর ভিডিও দেখেছিলাম, তাই আজ নিজ চোখে দেখতে এলাম। স্বাদ দারুণ, দামও একদম ঠিকঠাক।”

এ বিষয়ে দোকান মালিক মাহবুবুর রহমান মিয়া জানান, “বিদেশ থেকে ফেরার পর কিছুদিন হতবুদ্ধি হয়ে ছিলাম। পরে ভাবলাম, রাজবাড়ীতে এমন তন্দুরি চা কেউ করে না। তাই শুরু করি এই উদ্যোগ। সকালে টিউশন করাই, বিকেলে দোকান চালাই। খাঁটি দুধ আর মশলা দিয়ে চা তৈরি করি—দূরদূরান্ত থেকে লোক এসে খায়, প্রশংসা করে। আলহামদুলিল্লাহ, এখন ভালোই চলছে ব্যবসা।”

স্থানীয়দের ভাষ্য, ‘বিসমিল্লাহ তন্দুরি চা’ এখন মূলঘর এলাকার নতুন আকর্ষণ। সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা মাটির কাপে তন্দুরি চা হাতে নিয়ে গল্পগুজব—এ যেন রাজবাড়ীর এক নতুন সাংস্কৃতিক আবহ।