রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছার পর বিশ্ববাজারে এবার দ্রুত কমতে শুরু করেছে স্বর্ণের দাম। এক সপ্তাহে মূল্যবান এই ধাতুর দাম কমেছে ৮ শতাংশ, যা গত ১২ বছরের মধ্যে এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ হারের পতন। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির সামগ্রিক পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছে, পাশাপাশি ভূরাজনৈতিক উত্তেজনাও কমছে। এর প্রভাবই স্বর্ণের বাজারকে নিম্নমুখী করছে।
ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে পৌঁছানোর কয়েক দিনের মাথায় কমতে শুরু করেছে স্বর্ণের দাম। গোল্ড প্রাইস ডট অর্গের তথ্যানুসারে, গত ২১ অক্টোবর প্রতি আউন্স স্বর্ণ বিক্রি হয় ৪ হাজার ৩৫৫ ডলারে। এর পর থেকেই সপ্তাহজুড়ে দাম কমছে। সবশেষ ২৭ অক্টোবর দিনের শুরুতে দাম ছিল ৪ হাজার ১০০ ডলার, তবে দিন শেষে নেমে যায় ৩ হাজার ৮০ ডলারে। মঙ্গলবার দিনের শুরু থেকেই মূল্যবান এ ধাতুর দাম নিম্নমুখী।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের শুরুতে ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার কমার সম্ভাবনা এবং ডলারের দুর্বলতার কারণে স্বর্ণের চাহিদা বেড়েছিল। তবে এখন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় স্বর্ণের উপর চাহিদা কমছে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)-এর সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, "মধ্যপ্রাচ্যে যে সংকট ছিল, সেটা অনেকটাই কমে এসেছে। পরিস্থিতি অনেকটা ভালো দিকে যাচ্ছে। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ধারাবাহিকভাবে এগোচ্ছে।"
এদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দাম না কমলেও এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারেও। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ। সবশেষ সোমবার ভরিতে সাড়ে তিন হাজার টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের নতুন দাম ২ লাখ ৪ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করে জুয়েলার্স সমিতি।
আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, "আমাদের দেশের বাজারটা নিয়ন্ত্রণ করে, বিশেষ করে বুলিয়ন যারা। যারা পিওর গোল্ড বিক্রি করে, তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা যারা জুয়েলারি ব্যবসা করি, তারা সেই বাজার দেখে দাম নির্ধারণ করি।"
বাজার বিশেষজ্ঞদের ধারণা, স্বল্পমেয়াদে দাম আরও কিছুটা কমলেও ২০২৬ সালে স্বর্ণের দাম আবার ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। গোল্ডম্যান স্যাকসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী বছরের মাঝামাঝি স্বর্ণের দাম প্রায় ৬ শতাংশ বাড়তে পারে।




Comments