Image description

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুল নেতাকর্মীদের শান্ত ও সহনশীল থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার গৌরীপুরে নিজের বাড়িতে উপস্থিত নেতাকর্মীদের এ নির্দেশনা দেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, ‘পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে আমাদের যে পথচলা শুরু হয়েছিল, সেই সকল অঙ্গীকারকে পরিণতি দিতে আমাদের সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল, একটি পরিবার। আমাদের সম্মিলিত পথচলাই কেবল পৌঁছে দিতে পারে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে।’
ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুল আরও বলেন, ‘আমাদের দেশ, আমাদের মাতৃভূমি এক দীর্ঘ সময় ধরে স্বৈরাচারের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে। আমাদের একতাবদ্ধ চেষ্টা, পরিশ্রম আর দেশের প্রতি দায়বদ্ধতাই কেবল পারে আমাদের সন্তান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে।’
তিনি বলেন, ‘ধানের শীষ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রতীক। ধানের শীষকে বিজয়ী করে তারপর হবে আমার আনন্দ মিছিল। এই মুহূর্তে দল এবং দেশের মানুষের আমার প্রতি আস্থার যথাযথ মর্যাদা রক্ষা করাই আমার একমাত্র দায়িত্ব বলে মনে করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আমাকে সংসদীয় আসন ৫৮ (নাটোর-১ লালপুর বাগাতিপাড়া) থেকে ধানের শীষের প্রার্থী মনোনীত করায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও স্থায়ী কমিটির সকল নেতৃবৃন্দসহ দলের সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার মাধ্যমে লালপুর-বাগাতিপাড়ার মানুষের আশা ও আকাঙ্ক্ষার পূর্ণতা পেয়েছে।’
ব্যারিস্টার পুতুল আরও বলেন, বিএনপি যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে, নারীর সমান অধিকার ও ক্ষমতায়নের যে অঙ্গীকার করেছে, আমাকে মনোনয়ন দেওয়ার মাধ্যমে সেই পথের যাত্রা শুরু হলো। এর জন্য আমাকে অনেক ত্যাগ ও পরিশ্রম করতে হয়েছে। দলের প্রতি ভালোবাসা, নিবেদন ও যোগ্যতা দিয়ে যে আস্থা অর্জন করেছি, তা আরও বেগবান হবে ইনশাআল্লাহ।’
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ছাড়াও অনেকগুলো দল রয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি সহ অন্যান্য সকল দল ও জনগণ যদি ভোটে অংশগ্রহণ করে। সরকার ও প্রশাসন মিলে যদি একটি উৎসবমুখর সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারে। তাহলে সেটিই হবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। সেখানে নিষিদ্ধ ঘোষিত কোনো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারল কি পারল না সেটা বিবেচ্য বিষয় হবে না।’
এ সময় একই পরিবার থেকে বড় ভাই ডা. ইয়াসির আরশাদ রাজন ও তার নিজের মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়ে তিনি জানান, পারিবারিক ও রাজনৈতিক কৌশলের কারণে তারা একই সাথে মাঠে রাজনীতি করেছেন। একই সাথে মনোনয়ন চেয়েছেন। দল যাকে যোগ্য মনে করেছে তাকে দিয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল পটল পরিবারের মধ্যে যেন মনোনয়ন নিশ্চিত করা যায়। সে উদ্দেশ্য আমরা কাজ করেছি। আশা করছি দ্রুত বড় ভাইয়ের সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবো।
তার মনোনয়ন পাওয়ার পরে এলাকায় সহিংসতার বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। গত ১৭ বছরে বিএনপি সহ কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন করতে পারেনি। প্রতিটি আসনে বিএনপির একাধিক যোগ্য প্রার্থী রয়েছে। তারা সকলেই যোগ্য এবং দলের ত্যাগী কর্মী। পছন্দের প্রার্থী মনোনয়ন না পাওয়া সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা রাগ ও ক্ষোভ থেকে থাকতে পারে। তাদেরকে দুষ্কৃতিকারী বলা ঠিক হবে না। তবে কেউ যদি আমার ভাইয়ের নাম নিয়ে কোনো অপপ্রচার করে থাকে তাহলে সেটা একেবারেই ঠিক নয়। আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ নাই। অচিরেই সকল সমর্থক ও নেতাকর্মীরা আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধানের শীষের জন্য কাজ করবেন।
পরে তিনি তার বাবা সাবেক যুব ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মরহুম ফজলুর রহমান পটল ও প্রয়াত অন্যান্য স্থানীয় বিএনপি নেতাদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে তার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন বলে জানান। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে তার পাশে থাকার আহ্বান জানান।