Image description

ভুরুঙ্গামারী উপজেলার মাদার ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে এক অসুস্থ নারী রোগীকে শ্রীলতাহানি ও তার স্বামীকে মারধরের লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মাদার ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে আগত ডাক্তার শফিকুল ইসলাম রিপনের চেম্বারে এ ঘটনা ঘ‌টে।

অভিযোগে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মৃত মতিউল্লাহ শেখের হতদরিদ্র পুত্র এনছার আলীর স্ত্রী চায়না বেগম শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ থাকায় গত (৭নভেম্বর ২৫) শুক্রবার চিকিৎসা নিতে সকাল ১১টায় মাদার ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে তিন বছরের শিশু সন্তান ইয়াসমিন খাতুন কে সাথে করে নিয়ে যায়। মাদার ক্লিনিকে আগত রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডাক্তার শফিকুল ইসলাম রিপনের চেম্বারে এনছার আলীর স্ত্রী চায়না বেগম কে একা ঢুকানো হয়। ডাক্তারের চেম্বারে রোগীর দীর্ঘ সময় থাকায় তার শিশু কন্যা ইয়াসমিন কান্নাকাটি শুরু করে। এনছার তার শিশু কন্যাকে নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারে প্রবেশ করতে চাইলে ক্লিনিকের স্টাফ বাঁধা প্রদানসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করতে করতে ম্যানেজার তার রুমের পিছনে নিয়ে যায়। এনছারের আত্মচিৎকারে তার স্ত্রী স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাকেও বেধম মারধর করে শ্রীলতাহানিতা করে। এক পর্যায়ে এনছারকে মারতে মারতে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন শানু, স্বপন ও অজ্ঞাত কয়েকজন। অতঃপর মাদার ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমের স্বত্বাধিকারী স্বপন তার লোকজন দিয়ে অসুস্থ চায়না বেগম ও স্বামী এনছার কে মারধর করতে করতে ক্লিনিক থেকে বের করে দেয়। এরপর স্থানীয়রা ক্লিনিকের সামনে জড়ো হয়ে এর প্রতিবাদ করেন। ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী স্বপন ক্ষমতা ও অর্থের প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টিকে দমিয়ে রাখেন। ভুক্তভোগী এনছার আলী সঠিক বিচার না পেয়ে ভুরুঙ্গামারী থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে ন্যায় বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগকারী এনছার আলী বলেন, আমার স্ত্রী চায়না বেগম ভীষণ অসুস্থ থাকায় গত শুক্রবার চিকিৎসা নিতে মাদার ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমে তিন বছরের শিশু সন্তান ইয়াসমিন খাতুন কে সাথে নিয়ে যাই। মাদার ক্লিনিকের ডাক্তার শফিকুল ইসলাম রিপনের চেম্বারে আমার স্ত্রী চায়না বেগম কে একা ঢুকানো হয়। চেম্বারে রোগীর দীর্ঘ সময় থাকাতে আমার শিশু কন্যা ইয়াসমিন কান্নাকাটি করতে থাকে। শিশু কন্যাকে নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারে প্রবেশ করতে চাইলে ক্লিনিকের স্টাফ বাঁধা প্রদানসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করতে করতে আমাকে ম্যানেজার তার রুমের পিছনে নিয়ে যায়। আমার আত্ম চিৎকারে স্ত্রী বাঁচাতে এগিয়ে গেলে  তাকেও বেধম মারধর করে শ্রীলতাহানিতা করে। এক পর্যায়ে আমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন শানু, স্বপন ও অজ্ঞাত কয়েকজন। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করায় মাদার ক্লিনিকের মালিক স্বপন আমাকে অভিযোগ তুলে নিতে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। অভিযোগ তুলে না নিলে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করার হুমকি দিচ্ছেন। আমি এর ন্যায় বিচার দাবি করছি।

মাদার ক্লিনিক এন্ড নার্সিং হোমের স্বত্বাধিকারী স্বপন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আপসের চেষ্টা চলছে। আপস না হলে আমরা এনছার আলীর বিরুদ্ধে মানহানি ও হয়রানি মামলা দায়ের করবো। 

ভুরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আবু সায়েম বলেন, আমি যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি দেখতে পেয়েছি। রোগীর সঙ্গে এ ধরনের আচরণ করা মোটেও ঠিক হয়নি। আমি ঢাকা সচিবালায়ে আছি। শুনলাম বিষয়টি নিয়ে আপোসের চেষ্টা চলছে।

কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডাক্তার মো. গওছিল আজিম চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।