পরিবেশ দূষণ রোধ ও কৃষিজমি রক্ষায় পাঁচ বছর আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারি সব ধরনের নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কার কাজে পোড়া মাটির ইটের পরিবর্তে শতভাগ ‘ব্লক ইট’ ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে আগামী ছয় মাসের মধ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালযয়ের সচিবকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
কৃষিজমির টপ সয়েল বা ওপরের উর্বর মাটি রক্ষা এবং ইট ভাটার ধোঁয়া থেকে পরিবেশ বাঁচাতে ২০১৯ সালে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে সরকার। ওই বছরের ২৪ নভেম্বর জারি করা প্রজ্ঞাপনে সরকারি নির্মাণকাজে ধাপে ধাপে ব্লক ইটের ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রা ছিল:
২০১৯-২০ অর্থবছর: ১০ শতাংশ
২০২০-২১ অর্থবছর: ২০ শতাংশ
২০২১-২২ অর্থবছর: ৩০ শতাংশ
২০২২-২৩ অর্থবছর: ৬০ শতাংশ
২০২৩-২৪ অর্থবছর: ৮০ শতাংশ
২০২৪-২৫ অর্থবছর: ১০০ শতাংশ (শতভাগ)
নির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহারের কথা থাকলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। গৃহায়ন ও গণপূর্ত, স্থানীয় সরকার, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মতো বড় সরকারি সংস্থাগুলো এখনো তাদের নির্মাণকাজে পোড়া ইটের ওপরই বেশি নির্ভরশীল। এ কারণে বাংলাদেশ কনক্রিট ব্লক প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের পক্ষে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করা হয়।
রিটকারী আইনজীবী নূর-উস সাদিক চৌধুরী জানান, সরকারি প্রজ্ঞাপন বাস্তবায়নে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করেই এই রিট করা হয়েছে।
আদালত আদেশের পাশাপাশি রুল জারি করেছেন। রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে—২০১৯ সালের প্রজ্ঞাপন অনুসারে সরকারি সব কাজে শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহারে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না। পরিবেশ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মূখ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ৬৫ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।




Comments