শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে বাঙালির পিঠা উৎসব শুরু হলেও এবার রাঙামাটির চিত্রটা একটু ভিন্ন। সেখানে চিরাচরিত সাদা ভাপা পিঠাকে টেক্কা দিচ্ছে পাহাড়ে জুম চাষে উৎপাদিত কালো বিনি চালের ‘কালো ভাপা পিঠা’। দেখতে অনেকটা চকলেট কেকের মতো এই পিঠা এখন পর্যটক ও স্থানীয় ভোজনরসিকদের প্রধান আকর্ষণে পরিণত হয়েছে।
সন্ধ্যা নামতেই রাঙামাটি শহরের রাজবাড়ি স্টেডিয়াম এলাকা, বনরূপা এবং আসামবস্তি এলাকায় বসে পিঠার ভাসমান দোকান। সেখানে ধোঁয়া ওঠা গরম চিতই, সাদা ভাপা ও তেলেভাজা পিঠার ভিড়ে সবচেয়ে বেশি চাহিদা দেখা যাচ্ছে কালো বিনির ভাপা পিঠার। প্রতি পিস ২০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া এই পিঠা পরিবেশন করা হয় কাঁঠাল পাতায়, যা এর স্বাদে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।
কুমিল্লা থেকে আসা পর্যটক বাবুল করিম বলেন, ‘কালো রঙের ভাপা পিঠা এই প্রথম খেলাম। এর নিজস্ব একটি সুগন্ধ আছে, যা সাধারণ ভাপা পিঠার চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা এবং সুস্বাদু।’
পিঠা বিক্রেতা নিয়তি চাকমা ও সুবর্ণা চাকমা জানান, এই পিঠা তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ‘লঙ্কা পড়া বিনি’ নামের বিশেষ এক ধরনের কালো চাল। জুম থেকে সংগ্রহ করা এই ধান শুকিয়ে মেশিনে গুঁড়ো করা হয়। এরপর নারকেল ও গুড় মিশিয়ে ভাপে দিয়ে তৈরি হয় এই পিঠা। সাধারণ চালের পিঠার চেয়ে এটি অনেক বেশি নরম এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর।
স্থানীয় বাসিন্দা রূপময় চাকমা জানান, এই পিঠা পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়া দেশের অন্য কোথাও সচরাচর পাওয়া যায় না। একসময় আসামবস্তি এলাকার নারীরা ঘরে ঘরে এই পিঠা তৈরি করতেন, যা এখন বাণিজ্যিক রূপ পেয়েছে এবং পর্যটকদের মাধ্যমে এর সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ছে।




Comments