হংকংয়ে প্রায় ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর গভীর শোক ও জনরোষের মধ্যেই রোববার (৭ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হলো আইন পরিষদের (লেজিসলেটিভ কাউন্সিল) নির্বাচন। নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে শহরজুড়ে কঠোর নজরদারি জোরদার করে ভোটগ্রহণ পরিচালনা করে কর্তৃপক্ষ।
তাই পো এলাকার ওয়াং ফুক কোর্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ১৫৯ জনের মৃত্যু হংকংবাসীকে এখনো শোকাহত ও আতঙ্কিত করে রেখেছে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে সংস্কারকাজ চলাকালে ঘটে যাওয়া এ দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলকর্মীদের প্রায় দুই দিন সময় লাগে।
ঘটনাস্থলের আশেপাশে রোববার সকাল থেকেই প্রায় একশ পুলিশ সদস্য টহলে ছিল। একই সঙ্গে জনঅসন্তোষ কমাতে এবং সম্ভাব্য অস্থিরতা ঠেকাতে অপরাধ ও দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন।
সরকারের ব্যর্থতা ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে অনেকেই নির্বাচনে ভোট না দেওয়ার ঘোষণা দেন। ৭০-এর বেশি বয়সি স্থানীয় বাসিন্দা চেং বলেন, এটা ত্রুটিপূর্ণ সরকারের ফল, এখন সুস্থ কোনো ব্যবস্থাই নেই। তিনি সমালোচনার কারণে সরকারি প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন।
ভোট শেষে দ্রুত দুর্ঘটনাস্থল পরিষ্কারের প্রস্তুতি লক্ষ্য করা যায়, যা সরকারের আশঙ্কা ও জনগণের ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।
চীনের জাতীয় নিরাপত্তা কার্যালয় শহরে ‘বিরোধী-চীন’ বিক্ষোভ প্রতিরোধে সতর্কবার্তা দিয়েছে এবং ভোটে অংশ নিতে জনগণকে আহ্বান জানিয়েছে। হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী জন লি বলেন, প্রতিটি ভোটই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমর্থন এবং প্রশাসনিক সংস্কারের অগ্রগতির প্রতীক।
বেইজিং সমর্থিত সরকারের ‘দেশপ্রেমিক’ যাচাইয়ের মধ্য দিয়ে মনোনীত প্রার্থীরাই এবার লড়ছেন। ৯০টি আসনের মধ্যে সরাসরি নির্বাচিত হয় মাত্র ২০টি। ২০২১ সালের নির্বাচনী সংস্কারের পর থেকে ভোটার সংখ্যা টানা চার বছর ধরে কমছে-২০২১ সালের ৪.৪৭ মিলিয়ন থেকে এবার নেমে এসেছে ৪.১৩ মিলিয়নে।
গণতন্ত্রপন্থি দলগুলো ভেঙে যাওয়া ও ব্যাপক পদত্যাগের কারণে নির্বাচন মূলত একদলীয় প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে। ফলে এই নির্বাচনকে বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণ শক্তি পরিমাপের আরেকটি পরীক্ষাই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।




Comments