Image description

ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক হয়ে দীর্ঘ ১৩ মাস কারাভোগের পর দেশে ফিরেছেন কুড়িগ্রামের ছয় জেলে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে তারা দেশে প্রবেশ করেন। 

এ সময় ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ন (৩৯) বিজিবি, বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন পুলিশ, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও ভারতীয় পুলিশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

কারামুক্ত জেলেরা হলেন; চিলমারী উপজেলার হরিণের বন্দ এলাকার মো. রাসেল মিয়া (৩৫), ব্যাপারী পাড়া এলাকার বিপ্লব মিয়া (৪৫), মো. মীর জাহান আলী (৪৫), বকুল মিয়া (৩০), মো. আমের আলী (৩৫) এবং রৌমারী উপজেলার বকবাদা এলাকার মো. চাঁন মিয়া (৬০)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাকুগাঁও ইমিগ্রেশন পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পলাশ চন্দ্র সরকার।

জানা যায়, গত বছরের ৩ নভেম্বর মাছ ধরার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন তারা। এরপর থেকে তাদের কোনও খোঁজ মিলছিল না। পরে ভারতের মেঘালয়ের আমপাতি জেলার মাহিন্দগঞ্জ থানার তুরা এলাকার এক বাসিন্দার মাধ্যমে গোপনে পাঠানো চিঠির সূত্র ধরে তাদের অবস্থান জানা যায়। ৪ নভেম্বর জিঞ্জিরাম নদী দিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশের পর অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে বিএসএফ সদস্যরা তাদের আটক করে। এরপর শুরু হয় দীর্ঘ ১৩ মাসের অপেক্ষা ও অনিশ্চয়তা। ভারতের বিভিন্ন কারাগারে আটক থাকার পর অবশেষে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তারা মুক্তি পান।

দেশে ফেরার মুহূর্তে সীমান্তে স্বজনদের কান্না ও আনন্দের মিলিত আবেগে আবহ আবেগঘন হয়ে ওঠে।

বকুল মিয়ার স্ত্রী আজেদা বেগম বলেন, “প্রায় এক বছর ধরে পথের ধারে বসে থাকতাম-স্বামী ফিরবে কিনা ভাবতে ভাবতে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল। আজ তাকে নিরাপদে দেখে চোখের জল থামাতে পারছি না। আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করেছেন।”

মীর জাহানের স্ত্রী মোছা. ববিতা বেগম বলেন, “আমাদের জীবনে স্বামী ছাড়া সবকিছুই অন্ধকার ছিল। প্রতিটি দিন ছিল আতঙ্ক আর অশান্তির মধ্যে। আজ সে ফিরে এসেছে-এই সুখের মুহূর্ত ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।”

বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, জেলেদের উদ্ধারে বাংলাদেশ সরকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন সমন্বিতভাবে কাজ করেছে। তাদের ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় ভারতের আদালতের আইনি নিষ্পত্তি শেষে বিজিবি,বিএসএফ ও দুই দেশের পুলিশের পতাকা বৈঠকের মধ্যদিয়ে জেলেরা মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরার সুযোগ পেয়েছেন।