Image description

হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌরসভার শান্তিপাড়া এলাকায় কোনো পূর্ব নোটিশ ছাড়াই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে অন্তত দুইটি পরিবারকে ঘরছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এতে শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।

গত ৭ ডিসেম্বর (রবিবার) দুপুর আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিপাড়া এলাকায় এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী মৃত এনাম খাঁন বাবুলের স্ত্রী ফয়জুন্নাহার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের আগে কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। হঠাৎ করেই এসে ঘর ভেঙে দিয়েছে। আমরা প্রায় ২৫ বছর ধরে নিয়মিত পৌরসভার হোল্ডিং ট্যাক্স দিয়ে আসছি। এখন মাথা গোঁজার কোনো ঠাঁই নেই। প্রশাসনের কাছে একটাই দাবি আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।’

অন্য ভুক্তভোগী হেলেনা বেগম বলেন, ‘শীতের মধ্যে শিশুদের নিয়ে রাস্তায় পড়ে আছি। পুনর্বাসনের কোনো উদ্যোগ না নিলে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে যাবে।’

এছাড়াও সেলিমা বেগম, পলি আক্তারসহ আরও কয়েকটি পরিবার অভিযোগ করে বলেন, কোনো ধরনের প্রস্তুতির সময় না দিয়েই এক্সেভেটর দিয়ে তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। মালামাল সরানোর সুযোগও দেওয়া হয়নি। কোনো সরকারি নোটিশ দেখানো হয়নি বলেও দাবি করেন তারা। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন ভুক্তভোগীরা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারি জায়গায় অবৈধ স্থাপনা থাকলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ হতে পারে। তবে কোনো নোটিশ বা সময় না দিয়ে হঠাৎ ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া মানবিকতার চরম লঙ্ঘন।

এ বিষয়ে সওজের স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, সরকারি খাস জায়গা দখলমুক্ত করার নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তবে নোটিশ সংক্রান্ত অভিযোগ থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ, হবিগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এ প্রসঙ্গে মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদ বিন কাশেম বলেন, ‘সওজের জায়গা থেকে সওজ উচ্ছেদ করতেই পারে। তারপরও ভুক্তভোগীদের আবেদন মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা হবে।’

এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর দ্রুত পুনর্বাসনের দাবি উঠেছে।