Image description

ময়মনসিংহের ভালুকায় হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে হিন্দু যুবককে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার পর লাশে আগুন দিয়েছে 'তৌহিদি জনতা'। এর আগে লাশ টেনেহিঁচড়ে নিয়ে রোড ডিভাইডারে ঝুলিয়ে রাখা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে উপজেলার জামিরদিয়া ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত যুবক ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার রবিচন্দ্র দাসের ছেলে দীপুচন্দ্র দাস। তিনি ওই কারখানার শ্রমিক ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীপু ওই কারখানায় লিংকিং সেকশনে কাজ করতেন। সন্ধ্যার দিকে কাজ করার সময় সহকর্মীর সঙ্গে ধর্মীয় বিষয়ে কটূক্তি করেন। তাৎক্ষণিক ওই ঘটনার কথা মিলগেটের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। অল্প সময়ের ব্যবধানে দেড়-দুই হাজার মানুষ কারখানার সামনে জড়ো হয়। তারা কারখানার গেট ভাঙার চেষ্টা করে ও গেটের ভেতরে ঢুকে দীপুকে টেনে বের করে আনে এবং গণপিটুনি দেয়।

এ সময় শিল্প পুলিশ ও ভালুকা মডেল থানা পুলিশের একটি দল তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আত্মরক্ষা করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই দীপু মারা যান।

পরে জনতা লাশ টেনেহিঁচড়ে নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। রাত আনুমানিক সোয়া ১১টায় লাশ ঝুলিয়ে কেরোসিন দিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ফেলে।

এর কিছুক্ষণ আগে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে লাশ হেফাজতে নেয়। এরপর লাশ ভালুকা মডেল থানায় নিয়ে আসা হয়।

এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু জানা যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফিরোজ হোসেন জানান, ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের মাস্টারবাড়িতে মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করার ঘটনায় একজন নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তির লাশ পুলিশের হেফাজতে আছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।