যমুনা নদীতে ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে পথ হারিয়ে ৪৭ জন বরযাত্রীবাহী একটি নৌকা মাঝনদীতে আটকা পড়েছে। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে বগুড়ার সারিয়াকান্দি থেকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ যাওয়ার পথে এই বিপত্তি ঘটে। গভীর রাত পর্যন্ত উদ্ধারকারী দল পৌঁছাতে না পারায় খোলা নদীর ওপর তীব্র শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বর-কনেসহ যাত্রীরা।
জানা গেছে, জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার তারতাপাড়া এলাকার নিলয় হাসান ছানির (২০) বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বরযাত্রীরা বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কলাতলী ঘাট থেকে নৌকায় রওনা হন। নৌকায় বর-কনে ছাড়াও ১৭ জন নারী ও ৯ জন শিশু রয়েছে। শিশুদের মধ্যে চারজনের বয়স মাত্র এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে।
বরের বড় ভাই রাশেদুল ইসলাম বাবু জানান, মাঝনদীতে পৌঁছানোর পর হঠাৎ কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে নৌকার মাঝি দিক হারিয়ে ফেলেন। রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চেষ্টা করেও কিনারা খুঁজে পাওয়া যায়নি। একপর্যায়ে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ যোগাযোগ করা হলেও ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধারকারী দল তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। নিরুপায় হয়ে মাঝনদীতেই নোঙর করে অবস্থান নিতে হয় তাদের।
বরযাত্রী বজলুর রহমান বলেন, যাত্রার সময় তেমন কুয়াশা ছিল না। কিন্তু মাঝনদীতে পৌঁছানোর পর কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। ছোট শিশু ও নারী নিয়ে আমরা চরম দুর্ভোগে আছি। একদিকে তীব্র শীত, অন্যদিকে নিরাপত্তাহীনতায় সবাই আতঙ্কিত। পলিথিন মুড়িয়ে কোনোমতে বসে আছি। মোবাইলের চার্জও শেষ হয়ে আসছে।
নৌকার মাঝি আবুল কাশেম বলেন, টর্চলাইটে পাঁচ ফুটের বেশি দেখা যায় না। কোন দিকে যাব, সেটাই বুঝতে পারছি না। নদীতে পানি কম থাকায় একটু এগোলেই নৌকা আটকে যাচ্ছে। সম্ভবত সারিয়াকান্দি ও মাদারগঞ্জের জামথল ঘাটের মাঝামাঝি কোথাও আছি। এখন সকাল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।
মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাকের আহমেদ বলেন, নৌকাটি সারিয়াকান্দি থানার জলসীমার মধ্যে অবস্থান করছে। বিষয়টি সারিয়াকান্দি থানা ও যমুনা তীরবর্তী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানানো হয়েছে। তবে ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধারকারী দল নৌকার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারছে না। নৌ-পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।




Comments