বৃহস্পতিবার ২৫ ডিসেম্বর ছিল খ্রিষ্টানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ‘বড়দিন’। দিনটি ছিল সরকারি ছুটির দিন। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে টানা তিন দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটকের সমাগম হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পর্যটন জেলা কক্সবাজারজুড়ে দেখা মিলেছে লাখো মানুষের উপস্থিতি। বিশেষ করে সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী পয়েন্ট, হিমছড়ি, ইনানী, পাটোয়ার টেক, সাগর লাগোয়া টেকনাফের জিরো পয়েন্ট, মহেশখালীর সোনাদিয়া, আদিনাথ মন্দির, রামুর বৌদ্ধ প্যাগোডা, নতুন সম্ভাবনার দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার বাড়িঘরে হাজারো পর্যটকের সরব পদচারণা। পর্যটকরা ছুটছেন প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনেও।
টানা ছুটিতে সৈকতের বালুকাবেলায় আগত পর্যটকরা মেতে আছেন অবকাশযাপনে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করার পাশাপাশি বন্ধুবান্ধব পরিবার-পরিজন নিয়ে সমুদ্র শহরে তারা অতিবাহিত করছেন আনন্দমুখর সময়।
রাজধানীর মিরপুর থেকে সপরিবারে বেড়াতে আসা পর্যটক তাওসিফ মাহমুদ বলেন, কক্সবাজার প্রিয় জায়গা, সুযোগ পেলেই চলে আসি পরিবার নিয়ে, সমুদ্র আমাকে মুগ্ধ করে। শীতের সময় এখানকার পরিবেশটা অন্যরকম ভালো লাগে।
সিলেট থেকে আসা পর্যটক নাসির জানান, কক্সবাজারে এখন পিক আওয়ার চলছে। হোটেল রুম বুকিং দিতে অনেক বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের নজর দেওয়া জরুরি।
কক্সবাজারে আসা পর্যটকদের আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মধ্যে আছে ভোগান্তিও। বাড়তি খরচ এবং সৈকত এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর উৎপাতসহ কিছু দৃশ্যমান অব্যবস্থাপনা চোখে পড়ে। পাবনা থেকে আসা ব্যবসায়ী ইলিয়াস বলেন, এখানে সবকিছুর দাম বেশি। অটোচালকরা অল্প দূরত্বেও অনেক বেশি টাকা দাবি করে বসেন। খাবারের দামও উচ্চ। এসব নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের যথাযথ তদারকি করা উচিত।
এর আগে বৃহস্পতিবার বড়দিন উপলক্ষে শহরের অভিজাত হোটেলগুলোতে ছিল নানা আয়োজন। উৎসবের আমেজ তৈরি করতে যেগুলো বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পরবর্তী থার্টি ফার্স্ট নাইট পর্যন্ত শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলের সব কক্ষই এরই মধ্যে বুকিং হয়ে আছে। এই মৌসুমে শতকোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা দেখছেন পর্যটক সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ২৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) পর্যন্ত সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে তিন দিনের ছুটি। এ ছাড়া ৩১ ডিসেম্বর বছর শেষ হতে চলেছে। মাসের শেষ সময়ে প্রচুর পর্যটক আসছেন। সব মিলিয়ে পর্যটন ব্যবসায় শতকোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
এদিকে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি হয়রানি প্রতিরোধে নিয়মিত মনিটরিং অব্যাহত রেখেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। সংস্থাটির কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, আমাদের প্রথম এবং মুখ্য কাজ হচ্ছে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সে লক্ষ্যে নিয়মিত তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটক হয়রানি দমনে আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।
পর্যটকদের জন্য নির্ধারিত হেল্পলাইন- ০১৩২০১৬০০০০ নম্বরে যোগাযোগ করলে ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তা পাওয়া যাবে।




Comments