Image description

জুমাবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। পবিত্র এই দিনে আদি পিতা আদম আ. কে সৃষ্টি করা হয়েছিল। আবার কিয়ামতও এই দিনেই সংঘটিত হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- সূর্য উদয়ের দিবসগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমাবার। সে দিনে আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়। তাকে ওইদিন জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়। তাকে তা থেকে ওইদিন বের করা হয়। আর কিয়ামতও হবে জুমার দিনেই। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮৫০)

তাই বিনা কারণে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়ার ব্যাপারেও কঠোর নিষেধ রয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু উমর ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তারা উভয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) কে মিম্বরের সিঁড়িতে বলতে শুনেছেন, যারা জুমা পরিত্যাগ করে, তাদের এ কাজ থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। নতুবা মহান আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। অতঃপর তারা অবশ্যই গাফিলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৮৭৫)।

সালমান ফারসী (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন- যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, এরপর তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর মসজিদে যায়, আর দু’জনের মধ্যে ফাঁক করে না এবং তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ সালাত (নামাজ) আদায় করে। আর ইমাম যখন (খুতবার জন্য) বের হন তখন চুপ থাকে। তার এ জুমা এবং পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৬৪)

জুমার একটি অপরিহার্য অংশ হলো জুমার খুতবা। ঈমাম যখন খুতবা দেন সেটি মনযোগ সহকারে শোনা উচিত, কারণ খুতবা শোনা ওয়াজিব। এমনকি খুতবার সময় কোনো ধরনের কথা বলা বা তসবিহ পড়া কিংবা অন্য কোনো কাজ করার ক্ষেত্রেও কঠোর নিষেধাজ্ঞার কথা হাদিসে এসেছে।

তবে জুমার খুতবা নিয়ে একটি কথা প্রচলিত রয়েছে যে, খুতবার সময় নামাজের বৈঠকের মতোই বসে খুতবা শুনতে হবে। যদিও জুমার খুতবা চলাকালে অনেক সময় কেউ কেউ এক হাঁটু উঁচিয়ে বসেন। আবার কেউ কেউ দুই পা জড়িয়ে নিতম্বের ওপর ভর করেও বসেন। প্রশ্ন হলো- জুমার খুতবার সময় নামাজের মতো বসা কি বাধ্যতামূলক নাকি যেকোনোভাবে বসে খুতবা শুনলেই হবে?

ইসলামিক স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ মতে, জুমার খুতবার সময় নামাজের বৈঠকের মতোই যে বসতে হবে, এমন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। যেকোনোভাবে বসলেই হলো। মূল বিষয়টি হলো, খুতবা মনযোগ সহকারে শুনতে হবে এবং এই সময়ে কোনোরূপ উচ্চবাচ্য বা কথা-বার্তা বলা যাবে না। এমনটা করা গুনাহের কাজ।

তবে মনে রাখতে হবে, জুমার খুতবার সময় ২ হাঁটু উঠিয়ে ২ পা পেটের দিকে গুঁটিয়ে বসার ক্ষেত্রে নিষেধ রয়েছে। মুয়ায ইবনে আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার দিনে ঈমামের খুতবা দেয়ার সময় হাটুঁ উপরে উঠিয়ে কাপড় জড়িয়ে বসতে নিষেধ করেছেন। (সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ১১১০)