পাঠ্যপুস্তক থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, এই ভাষণ না জানলে দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে ভুলে যাবে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম মাওলা রনি বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়েছে যে সরকার পাঠ্যপুস্তক থেকে ৭ মার্চের ভাষণ বাদ দিচ্ছে। যারা এখন রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন, তাদের কি মায়াদয়া নেই? তারা কি এতটাই পাকিস্তানপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে গেছেন? অথচ সারা পৃথিবীতে এই ভাষণটি একটি ল্যান্ডমার্ক ও ‘ম্যাগনাকাটা’ হিসেবে স্বীকৃত। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও আর্কাইভে এটি সংরক্ষিত আছে।”
তিনি আরও বলেন, উইকিপিডিয়া ও বিশ্বের বিভিন্ন জ্ঞানকোষে এই ভাষণকে সবচেয়ে আকর্ষণীয়, গুরুত্বপূর্ণ ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ রাজনৈতিক বক্তৃতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এমন একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত দলিল আমরা কেন বাদ দিতে চাইছি, তা বোধগম্য নয়।
ভাষণটির সাহিত্যিক ও শৈল্পিক মান বিশ্লেষণ করে রনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু যখন এই ভাষণ দেন, তখন তিনি টুঙ্গিপাড়ার আঞ্চলিক ভাষার সঙ্গে প্রমিত বাংলা, ইংরেজি, আরবি, উর্দু, ফারসি ও হিন্দির এক জাদুকরী সংমিশ্রণ ঘটিয়েছিলেন। এই বক্তৃতায় শালীনতা, ভদ্রতা ও এক অদ্ভুত রিদম (ছন্দ) ছিল, যা মানুষের মনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করত।”
তিনি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, “যখন ভাষণটি পাঠ্যপুস্তকে প্রথম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, তখন মনে হয়েছিল জোর করে পড়ানোর দরকার নেই, কারণ এটি এমনিতেই মানুষের হৃদয়ে আছে। কিন্তু এখন এটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেখে প্রশ্ন জাগছে—আমরা আসলে কোন দিকে যাচ্ছি।”




Comments