Image description

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী জামিয়া গাফুরিয়া দারুসসুন্নাহ ইসলামপুর মাদ্রাসার বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলনকে ঘিরে এবারও দান-মান্নতের জোয়ার দেখা গেছে। মাত্র একদিনে জমা হয়েছে এক কোটিরও বেশি টাকা, যা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে বিরল ঘটনা।

১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত সাত দশকের পুরোনো এ মাদরাসাটি শুধু মুসলমান নয়, বিভিন্ন ধর্মের মানুষের কাছেও মান্নত পূরণের স্থান হিসেবে পরিচিত। সারাদেশে প্রচলিত আছে “ইসলামপুরে মান্নত করলে পূরণ হয়” এমন বিশ্বাস। মাদরাসাটি ঈশ্বরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বালিশিতা গ্রামে অবস্থিত।

১১ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) ৭৫তম ইসলামী মহাসম্মেলন শেষে দান-মান্নতের অর্থ ও সামগ্রী গণনা করা হয়। গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি, স্বর্ণালংকার, কৃষিপণ্যসহ নানা সামগ্রী মিলে একদিনে দানের পরিমাণ এক কোটিরও বেশি। কিছু সামগ্রী নিলামে বিক্রি করা হয়েছে, বাকিগুলো বিক্রির অপেক্ষায় রয়েছে ফলে পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মাদরাসার মুহতামিম মুফতি মাহমুদুল হক আযীযী জানান, বুধবার রাতে গণনা শুরু হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়। এবারের মাহফিলে প্রায় ২-৩ লাখ মুসল্লি অংশ নেন।

মাহফিল চত্বরে পুলিশ, আনসার, সেনা সদস্য ও মাদরাসার স্বেচ্ছাসেবকসহ ৫ শতাধিক ব্যক্তি নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন। দানের অর্থ গণনা শেষে পুলিশ তা নিরাপদে ব্যাংকে জমা দেয়।

ভোলা থেকে আসা মাহমুদ কলি বলেন, ‘ইসলামপুরের মাহফিল দেশে বড় ইসলামী সমাবেশগুলোর একটি। জীবনে একবার আসার ইচ্ছে ছিল, এবছর সেই স্বপ্ন পূরণ হলো।’

এখানে শুধু মুসলিম নয়, সনাতন ধর্মাবলম্বীরাও মান্নত করেন। চরফ্যাশনের কাজল বলেন, ‘এখানে মান্নত করলে পূরণ হয় এ বিশ্বাসে আমরা আসি।’

শিশুকাল থেকে মাহফিলে আসা স্থানীয় এহছানুল হক রানা ও বাবুল মিয়া বলেন, ‘বিয়ে, চুরি হওয়া জিনিস উদ্ধার নানান মান্নত করলে আল্লাহ পূরণ করেন। এখানে অনেক ঘটনার সাক্ষী আমরা।’

মাদরাসার মুহতামিম মুফতি মাহমুদুল হক আযীযী জানান, দান-মান্নতের অর্থ এতিম ও গরিব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও আবাসন এবং মাদরাসার উন্নয়ন কাজে ব্যয় করা হয়। তিনি সকলকে দান-সদকা করার আহ্বান জানান এবং বিকাশ নম্বরও (০১৭১৫১২০৭৮৫) প্রদান করেন।

মাদরাসা কমিটির সভাপতি ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক প্রকৌশলী লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু বলেন, ‘মানুষের দানই আমাদের প্রধান শক্তি। ভবিষ্যতে ইসলামিক স্কলারদের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠানকে আরও আধুনিক ও মানসম্মত শিক্ষার কেন্দ্রে রূপান্তরিত করতে কাজ করা হবে।’