Image description

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্জয় ঘোষের সরকারি গাড়ির চাপায় মদনমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অফিস সহকারী আশিষ কুমার দাষ বিনয় (৫৫)-এর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের চেলারচক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনাটি ঘটে ছাতক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্জয় ঘোষের সরকারি গাড়ি (নম্বর: সুনামগঞ্জ-থ-১০-০০১৩) দ্বারা। আশিষ কুমার দাস গুরুতর আহত হলে তাকে প্রথমে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা যায়, বুধবার ভোরে ছাতকের এসিল্যান্ড সঞ্জয় ঘোষ সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ‘কালনি এক্সপ্রেস’ ট্রেনে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময়মতো সিলেট রেল স্টেশনে পৌঁছাতে না পারায় ট্রেনটি ছেড়ে যায়। এরপর তিনি শ্রীমঙ্গল স্টেশনে ট্রেন ধরতে সরকারি গাড়ি নিয়ে রওনা হন। অন্যদিকে, আশিষ কুমার দাস পূজার ছুটিতে মোটরসাইকেলে করে সিলেট থেকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বাউরভাগে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে চেলারচক এলাকায় পৌঁছলে এসিল্যান্ডের গাড়ি তাকে চাপা দেয়।

ঘটনার পর রাজনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সরকারি গাড়ি ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। গাড়ির চালক আলবাব হোসেনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় রাজনগর থানায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি।

রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন খান জানান, “এসিল্যান্ডের গাড়িটি ছাতকের দিকে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেল আরোহীকে চাপা দেয়। আমরা মদনমোহন কলেজের অধ্যাপকের সঙ্গে কথা বলেছি। এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি।”

এ বিষয়ে জানতে সঞ্জয় ঘোষের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আশিষ কুমার দাসের মৃত্যুতে মদনমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

এ ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে সরকারি গাড়ির ব্যবহার ও দ্রুতগতির বিষয়ে।