Image description

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এক সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের স্বপ্ন থেকে সরকার দূরে সরে গেছে এবং দুই-তিনটি দল নিয়ে ক্ষমতা ভাগাভাগির রাজনীতিতে মগ্ন। এই রাজনীতি জনগণ মেনে নেবে না। তারা জোর দিয়ে বলেন, কুরআন-সুন্নাহর শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইনসাফভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব, যা প্রকৃত শান্তি ও অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করবে।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার কালাবিবির দীঘি মোড়ে একটি কনভেনশন হলে এই প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিন। সুন্নিপন্থি তিনটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী জোট গঠনের পর এটি ছিল প্রথম সমাবেশ। আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো নেতাকর্মী এতে অংশ নেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শনের লক্ষ্যে এই সমাবেশ নির্বাচনী গোডাউনে পরিণত হয়।

সমাবেশে বক্তাদের বক্তব্য

মাওলানা এম এ মতিন বলেন, “অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনরায়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সাধারণ মানুষ এখন ভালো নেই। জিনিসপত্রের দাম উর্ধ্বমুখী, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে। সুন্নিপন্থি প্রার্থীদের বিজয়ী করাই হবে সুশাসনের একমাত্র পথ। আমরা সুন্নিয়তের রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধভাবে প্রার্থী দেব।”

আহলে সুন্নতের কো-চেয়ারম্যান ড. এম এ অদুদ বলেন, “সাধারণ জনগণকে সম্পৃক্ত করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। মাওলানা এস এম শাহজাহান আনোয়ারা-কর্ণফুলীর গণমানুষের প্রিয়মুখ। সুদৃঢ় ঐক্যের মাধ্যমে আমরা বিজয় গড়ে তুলব।”

ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য এড. আবু নাছের তালুকদার বলেন, “আনোয়ারা-কর্ণফুলী সুন্নিয়তের উর্বর ভূমি। এখানে যোগ্য নেতৃত্ব আছে। আগামী নির্বাচনে কুরআন-সুন্নাহর প্রতিনিধিকে সংসদে পাঠাতে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”

মাওলানা এস এম শাহজাহান বলেন, “নির্বাচনে যে-ই প্রার্থী হোক, ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। মানুষ সুশাসন চায়। নির্ধারিত সময়ে জাতীয় নির্বাচন এখন সময়ের দাবি।”

সমাবেশের বিশেষ অতিথি

সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আহলে সুন্নতের কো-চেয়ারম্যান ড. এম এ অদুদ, ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য এড. আবু নাছের তালুকদার, মাস্টার আবুল হোসেন, জসিম উদ্দিন, ফেরদৌসুল আলম খান আল কাদেরী, মনির আহমদ আনোয়ারী, মোরশেদুল আলম মুন্সী, মাস্টার মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম, মুহাম্মদ দিদারুল ইসলাম, মোহাম্মদ ওসমান, মাওলানা মফিজ উল্লাহসহ অনেকে।

প্রচারণা ও নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ

সুন্নিপন্থি তিন রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী জোট গঠনের পর এই সমাবেশ ছিল প্রথম। এ উপলক্ষে আনোয়ারা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েকদিন ধরে জোরালো প্রচারণা চালানো হয়। আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেন, যা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শনের একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে।

সমাবেশের তাৎপর্য

এই সমাবেশে বক্তারা সুন্নিয়তের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, আনোয়ারা-কর্ণফুলীতে সুন্নিপন্থি রাজনীতির শক্তিশালী ভিত্তি রয়েছে। আগামী নির্বাচনে সুন্নিপন্থি প্রার্থীদের বিজয়ী করার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাবেন।