
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার ‘ব্যঙ্গাত্মক’ ছবি শেয়ারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
ঘটনাটি শুক্রবার (৩ অক্টোবর ২০২৫) সকালে উপজেলার পালিশারা গ্রামে সংঘটিত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আহতরা বর্তমানে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার বিবরণ
উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব কাজী জসিম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ৯নং গন্ধর্ব্যপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও পালিশারা শাহমিরান মিরাবাড়ি জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা ইলিয়াস হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তারেক রহমান ও রুমিন ফারহানার বিকৃত ছবি শেয়ার করেন। এ ঘটনার জেরে শুক্রবার সকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাওলানা ইলিয়াসের কাছে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে জামায়াতের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
আহত ইউনিয়ন যুবদল নেতা নেছার আহম্মেদ বলেন, “হামলায় আমাদের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।”
অন্যদিকে, উপজেলা জামায়াত নেতা মাওলানা মোজাম্মেল হোসেন পরান ফেসবুক পোস্টের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতেই ওই পোস্টটি ডিলিট করা হয়। মাওলানা ইলিয়াস হোসেন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দুঃখ প্রকাশ করে আরেকটি পোস্টও দেন। এরপরও মসজিদ কমিটি শুক্রবার সকালে এ বিষয়ে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা ইলিয়াসের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তাদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে জামায়াতের ১০-১২ জন নেতাকর্মী আহত হন।”
মাওলানা ইলিয়াস হোসেন নিজে বলেন, “আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে অসাবধানতাবশত একটি ছবি শেয়ার হয়েছিল। বিষয়টি জানার পর আমি তাৎক্ষণিকভাবে পোস্টটি ডিলিট করে দুঃখ প্রকাশ করে আরেকটি পোস্ট করেছি।”
পুলিশের বক্তব্য
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, “বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে মারামারির ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
এলাকায় উত্তেজনা
এ ঘটনার পর গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
Comments