
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে "কুলিয়ারচর প্রতিবন্ধী স্কুলে" সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কুলিয়ারচর প্রতিবন্ধী সেবা সংস্থার সভাপতি ফারজানা আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর কুলিয়ারচর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা গেছে, হামলাকারীরা মাদক কারবারির সঙ্গে জড়িত এবং স্কুলের সীমানা দেয়ালের ভাঙা অংশ ব্যবহার করে মাদক পাচার করতো।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুলিয়ারচর প্রতিবন্ধী সেবা সংস্থার পরিচালনায় পরিচালিত প্রতিবন্ধী স্কুলের একটি সীমানা দেয়ালের ভাঙা অংশ দিয়ে পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা আঙ্গুর মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা মাদক পাচার করতো। প্রশাসনের সহযোগিতায় এই পথ বন্ধ করে দেওয়া হলে ক্ষিপ্ত হয়ে আঙ্গুর মিয়া (৫৫), কাঞ্চন মিয়া (৫৫), হারিছ মিয়া (৫০), কাঞ্চন মিয়ার স্ত্রী বকুলা বেগম (৫০), আঙ্গুর মিয়ার মেয়ে বৃষ্টি আক্তার (২২) এবং তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্কুলে হামলা চালায়।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইয়াসিন খন্দকার প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে গেলে হামলাকারীরা স্কুলে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় বাধা দেওয়ার হুমকি দেয়। ইউএনও তাদের অফিসে গিয়ে কথা বলার নির্দেশ দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিষ্ঠানের মাঠে গিয়ে সংস্থার সভাপতি ফারজানা আক্তারকে গালিগালাজ করে এবং প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে ঢিল মারতে থাকে।
অভিযোগে বলা হয়, হামলাকারীরা সবাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আঙ্গুর মিয়া গত ৩৫ বছর ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছেন এবং এলাকার যুব সমাজকে নষ্ট করার পাশাপাশি উপজেলায় মাদকের বিস্তার ঘটিয়েছেন। তিনি তার ব্যবসার জন্য কাস্টমার ও পার্টনার তৈরি করে এলাকায় মাদকের ব্যাপক বিস্তার ঘটিয়েছেন। বর্তমানে বকুলা বেগম, বৃষ্টি আক্তার এবং আঙ্গুর মিয়ার স্ত্রী ভ্রাম্যমাণ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে কাজ করছেন।
আঙ্গুর মিয়াকে ইয়াবা ও গাঁজাসহ একাধিকবার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তিনি মাদক নির্মূল আইনের বিভিন্ন ধারায় একাধিক মামলার আসামি।
কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন (পিপিএম) জানান, প্রতিষ্ঠানে হামলার বিষয়ে একটি জিডি পাওয়া গেছে। তদন্তের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, মাদক ব্যবসা বন্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ দাবি করেছেন। কুলিয়ারচর প্রতিবন্ধী স্কুলটি এলাকার প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা ও সেবা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ ধরনের হামলার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
Comments