Image description

চট্টগ্রামের রাউজানে অর্ধশতাধিক ইটভাটার মধ্যে প্রায় ২০টি ইটভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরের আইন অমান্য করে জ্বালানি কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এসব ইটভাটার অধিকাংশেরই নেই প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ও পরিবেশের ছাড়পত্র। উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের মেলুয়া, হলদিয়া ইউনিয়নের বৃন্দাবন-বেনারস, পৌর এলাকার নয় নং ওয়ার্ড এবং রাউজান সদর ইউনিয়নের পূর্ব রাউজান এলাকা পরিদর্শনে এমন চিত্র দেখা গেছে।

গত বছর (২০২৪ সাল) জেলা পরিষদের পরিবেশ লাইসেন্স ও অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নিয়ে অবৈধভাবে কাঠ জ্বালিয়ে ইটভাটা পরিচালনার অভিযোগে কয়েকটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আশ্চর্যের বিষয় হলো, সেগুলোর অনেকগুলোই এখন পুনরায় চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাবার বাগান ঘেঁষে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটা পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো জ্বালানি কাঠ ব্যবহারকারী ও রাবার বাগান ঘেঁষে গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলো বন্ধের দাবি জানিয়েছে।

ডাবুয়া ইউনিয়নের মেলুয়া এলাকার 'বিবিসি' নামক একটি ইটভাটা গত বছর পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক গুঁড়িয়ে দেওয়া হলেও সেটি আবার নতুন করে চালু করা হয়েছে। ডাবুয়া রাবার বাগান ঘেঁষে এই ইটভাটায় বাংলা চিমনি স্থাপন করা হয়েছে এবং জ্বালানি হিসেবে স্তূপ করা হয়েছে বন থেকে কাটা কাঠ। বনের কাঠ উজাড় করে জ্বালানি স্তূপ করার ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এই ইটভাটায় আগুন দেওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে মালিকপক্ষ।

বিবিসি নামক ইটভাটার ম্যানেজার শাহাবুদ্দিন জানান, এই ইটভাটার মালিক সৈয়দ হোসেন কোম্পানি। এ ভাটায় কয়লার পরিবর্তে বন থেকে সংগ্রহ করা কাঠ জ্বালানো হবে। তিনি আরও বলেন, একবারে নয় লাখ করে ইট পোড়ানো হবে। গত বছর ৮ রাউন্ডে ৬৩ লাখ ইট বিক্রি করা হয়েছিল।

এছাড়া, মেলুয়া এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের গুঁড়িয়ে দেওয়া আরও তিনটি ইটভাটা নতুন করে চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। একই সাথে ইটভাটায় আগুন দেওয়ার জন্য গাড়ি করে কাঠ সংগ্রহ চলছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভাটায় আগুন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ইটভাটার দায়িত্বে থাকা ম্যানেজারবৃন্দ।

হলদিয়া ইউনিয়নের বৃন্দাবন ও বেনারস এলাকায় নির্বিচারে সরকারি ও বেসরকারি বন উজাড় করে কাঠ কাটা হচ্ছে। এই এলাকায় ১১টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি কয়লা দিয়ে ইট পোড়ালেও বাকি ইটভাটায় বনের কাঠ জ্বালানো হয়। অনেক ইটভাটারই লাইসেন্স নেই এবং পরিবেশের ছাড়পত্রও নেই। পরিবেশ দূষণের কারণে এ এলাকায় ফলজ গাছের ফলন হয় না এবং বনজ বাগান শীত মৌসুমে মরুভূমিতে পরিণত হয়।

রাউজান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংছিং মারমা বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। কোনো ইটভাটায় জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করতে পারবে না। সরকারি নিয়ম মেনে ইটভাটা পরিচালনা করতে হবে।