Image description

ফেনীর পরশুরাম পল্লী বিদ্যুৎ অফিস এখন দালালদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে, যেখানে সেবাপ্রত্যাশী গ্রাহকরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে যে, দালাল ও অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা যোগসাজশে গ্রাহকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।

মির্জানগর ইউনিয়নের কাউতলী গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যেসব বাড়িতে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছেনি, সেখানকার বাসিন্দারা সংযোগের জন্য পরশুরাম পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএমের কাছে গিয়ে কোনো সহায়তা পান না। বাধ্য হয়ে তাদের দ্বারস্থ হতে হয় দালালদের কাছে। দালালরা একটি নতুন মিটারের জন্য ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী জুলেখা আক্তার জানান, বন্যার কারণে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেলে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন তার মিটার খুলে নিয়ে যায়। পরে তারা বিল পরিশোধ না করার অভিযোগ তুলে মিটারগুলো স্থগিত করে রাখে। পুনরায় মিটার সংযোগের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গেলে ইদ্রিস নামের একজন ইলেকট্রিশিয়ান তার কাছে ৪ হাজার টাকা দাবি করেন। ইদ্রিস প্রথমে নিজেকে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা দাবি করলেও পরে ডিজিএমের কাছে জুলেখা এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিজিএম কোনো কথা বলতে রাজি হননি। জুলেখা আরও জানান, ইদ্রিস পরে ৭২০ টাকা দাবি করেন এবং টাকা দিতে রাজি না হলে মিটার না লাগানোর হুমকি দেন। যদিও ইদ্রিস নিজেকে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়ার কথা অস্বীকার করে দাবি করেছেন, তিনি যে টাকা চেয়েছেন তা তার কাজের মজুরি।

পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বাউর পাথর গ্রামের মোহাম্মদ রফিকের ছেলে দাউদ নবী অভিযোগ করেছেন, তিনি নতুন মিটারের জন্য আবেদন করে ৪ মাস ধরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ঘুরছেন। প্রথমে তার আবেদন মোবাইলের সংযোগ না পাওয়ার অজুহাতে বাতিল করা হয়। সর্বশেষ জুন মাসের ১৬ তারিখে আবেদন করার পরেও এখনো তার মিটার লাগেনি।

পৌর এলাকার দুবলাচাঁদ গ্রামের অনিক দাস জানান, তাদের বাড়ির বিদ্যুতের খুঁটি স্থানান্তরের বিষয়ে বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলে মনির হোসেন নামের এক কর্মকর্তা খুঁটি স্থানান্তরের জন্য টাকা দাবি করেন, অন্যথায় কাজ হবে না বলে জানান।

কাউতলী গ্রামের শফিকুর রহমান ভুঁইয়া জানান, গত তিন মাস ধরে তার বাড়িতে বিদ্যুতের লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন। অথচ এই তিন মাসের বিল তার নামে উঠিয়ে দিয়েছে বিদ্যুৎ অফিস, যা নিয়ে তিনি বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

এ বিষয়ে পরশুরাম পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম সোহেল আখতার বলেন, তাদের অফিসে কয়েকজন ইলেকট্রিশিয়ান আছেন, তবে তারা নিয়োগপ্রাপ্ত নন। তিনি আরও বলেন, তাদের সঙ্গে কেউ টাকা-পয়সার লেনদেন করলে সে দায়ভার অফিস নেবে না। তিনি জানান, তারা চাইলেও এই ইলেকট্রিশিয়ানদের তাড়াতে পারছেন না। গ্রাহকরা তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে অফিস ব্যবস্থা নেবে বলে ডিজিএম উল্লেখ করেন।