বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অবনতি এবং ভারতে ইচ্ছাকৃতভাবে পাথরের দাম বৃদ্ধির কারণে (গত ১৩ নভেম্বর) দীর্ঘ ১১দিন থেকে সোনাহাট স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারকরা ব্যবসা বন্ধ রেখেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর দেশের ১৮তম স্থলবন্দর হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দর। ১৪দশমিক ৬৮একর জমিতে স্থাপিত বন্দরে ৬০০মেট্রিক টনের ওয়্যারহাউস, প্রায় ২লাখ বর্গফুটের পার্কিং ও স্টকইয়ার্ড, প্রশাসনিক ভবন ও শ্রমিক বিশ্রামাগার রয়েছে। চালুর পর পরই ব্যবসায়ীদরে কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে বন্দরটি। ছাত্র জনতার আন্দোলনে গতবছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অবনতি এবং গত ১৩ নভেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়সহ সেভেন সিস্টারসের রপ্তানি ও আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাথরের দাম বাড়ার কারণে সোনাহাট স্থলবন্দরে আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাথর আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ রাখেন। বর্তমানে স্থলবন্দরের কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে সামান্যতম শ্রমিক জমাকৃত পাথরের কাজ করছেন।
অপরদিকে গত ৪মে থেকে সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে গার্মেন্টস পোশাক, তুলা, প্লাস্টিক, মেলামাইন, আসবাবপত্র, প্রসেসড ফুড পণ্য রপ্তানি ভারতের নিষেধাজ্ঞায় ব্যবসায়ায় নেমেছে ধস। ভারত থেকে আমদানি হতো পাথর। ভারতে পাথরের দাম বাড়লেও বাংলাদেশে প্রতি টনে ২০০টাকা থেকে ২৫০টাকা পাথরের দাম কমেছে। দীর্ঘ ১১দিন থেকে বন্দরে আমদানি ও রপ্তানিও বন্ধ অর্থ ও সময় অপচয় হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
সোনাহাট স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান, তাজুল ইসলাম ও নুর হোসেন রনি বলেন, ভারতের রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাথরের দাম প্রতিটনে বৃদ্ধি করায় গত ১৩ নভেম্বর থেকে আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছে। ভারত থেকে সোনাহাট বন্দরে পাথর এনে প্রতি টানে ২০০টাকা থেকে ৩০০টাকা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এ কারণে বৈষম্যের শিকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এ বন্দরের ব্যবসায়ীরা।
সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানিকারক নেতা আবুল হোসেন বলেন, আমরা পাথরের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। এই দামে না দিলে আমদানি বন্ধ থাকবে। অতিরিক্ত দামের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। ফলে দাম কমানোর কথা জানিয়ে ১১দিন থেকে আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে এখনো কোনো এ বিষয়ে সাড়া পওয়া যায়নি।
সোনাহাট স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা বদরুজ্জামান বলেন, ভারতের রপ্তানি ও আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা পাথরের দাম বাড়ার কারণে গত ১৩নভেম্বর থেকে সোনাহাট স্থলবন্দরে আমদানি রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে দু'দেশের ব্যবসায়ীরা কথা বলছেন।
সোনাহাট স্থলবন্দর সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, দু'দেশের আমদানি ও রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের কারণে সোনাহাট স্থলবন্দর পাথর আমদানি ও রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।




Comments