Image description

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সরিষা চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি এবং গত মৌসুমে সরিষার ভালো বাজারমূল্য পাওয়ায় এবার ব্যাপক উৎসাহে ফসলের মাঠে নেমেছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সরিষা বোনার ধুম পড়েছে। কৃষকেরা আধুনিক প্রযুক্তির ট্রাক্টর ও পাওয়ার টিলার দিয়ে দিনভর জমি প্রস্তুত করছেন। স্বল্পমেয়াদি, কম খরচ ও লাভজনক হওয়ায় সাথী ফসল হিসেবে সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন তারা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ বছর কৃষি প্রণোদনার আওতায় ১১ হাজার ৮০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ১ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছে। কৃষকরা বারি সরিষা-৯, ১৪, ১৭, ১৮ এবং বিনা-৯, ১০, টরি-৭ ও রাই-৫ সহ বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষা আবাদ করছেন। এছাড়া সরিষা ফুল থেকে প্রায় ২৫ মেট্রিক টন মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করা হয়েছে।

মাঠ ঘুরে দেখা যায়, পাওয়ার টিলার ও মই দিয়ে জমি সমান করে বীজ বুনছেন চাষিরা। কৃষক রফিক শেখ, আব্দুল করিম ও ফরিদ খাঁ জানান, গত বছর ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় এবারও তারা উন্নত জাতের সরিষা চাষ করছেন। তবে কৃষি উপকরণের দাম বাড়ায় উৎপাদন খরচ নিয়ে তারা কিছুটা চিন্তিত। ফরিদ মাদবর, বাশার মোল্লা ও জয়নাল শেখের মতো অনেক কৃষক চাষাবাদে আরও সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ভোজ্যতেলের চাহিদা বাড়ায় সরিষা চাষের গুরুত্ব বেড়েছে। আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।’

তিনি আরও জানান, গত বছর উপজেলায় ২৪ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদিত হয়েছিল এবং ২২টি মৌ-খামার থেকে ২১ টন মধু সংগ্রহ করা হয়েছিল। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন গত বছরকে ছাড়িয়ে যাবে এবং মধু সংগ্রহের পরিমাণ দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এতে কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন এবং দেশের ভোজ্যতেলের ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখবেন।