ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে নির্বাচনি হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে তফসিল ঘোষণা করবে এমন খবরে পুরো এলাকাজুড়ে রাজনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে।
দীর্ঘদিন ধরে এই আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির আধিপত্য থাকলেও এবার ভোটের মাঠে মূল লড়াই হতে যাচ্ছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে।
গত ৩ নভেম্বর বিএনপির প্রথম দফার প্রাথমিক তালিকায় হবিগঞ্জ-১ আসনের নাম না থাকলেও, ৪ ডিসেম্বর সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটে। গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই আসনে ড. রেজা কিবরিয়ার নাম ঘোষণা করেন। শহীদ সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. রেজার হাতে ধানের শীষ প্রতীক তুলে দেওয়ায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।
অন্যদিকে, সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। হবিগঞ্জ-১ আসনে দলটির প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মো. শাহজাহান আলী। দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে তার নাম ঘোষণার পর থেকেই নবীগঞ্জ-বাহুবলের গ্রামগঞ্জে গণসংযোগ, কর্মীসভা ও পোস্টারিংসহ নানামুখী প্রচারণা শুরু করেছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বড় দুই দল বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী এবং কর্মী-সমর্থকরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। হাটবাজার, চায়ের স্টল থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সবখানেই চলছে প্রচার-প্রচারণা।
ভোটারদের মতে, জাতীয় পার্টি, এনসিপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা না করায় এবং বামপন্থি দলগুলোর প্রভাব কম থাকায়, এবারের নির্বাচন হবে মূলত বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সরাসরি ভোটযুদ্ধ।
হবিগঞ্জ-১ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৬১ হাজার ২৮৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৩৩ হাজার ১৬ জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ২৮ হাজার ২৬৮ জন। নির্বাচনের জন্য ১৭৭টি কেন্দ্র ও ৯০৫টি ভোটকক্ষ চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।
দশকের পর দশক ধরে চলা রাজনৈতিক সমীকরণ ভেঙে এবার নবীগঞ্জ-বাহুবলে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হয়েছে। আসন্ন এই হাইভোল্টেজ লড়াই দেখার অপেক্ষায় এখন সাধারণ ভোটাররা।




Comments