চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মাধবখালী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক শহিদুল ইসলামের লাশ ৮ দিন পর ফেরত দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার চ্যাংখালী সীমান্তের শূন্যরেখায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে বিজিবির কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে বিএসএফ।
নিহত শহিদুল ইসলাম (৩৭) জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের উত্তরপাড়ার নস্কর আলীর ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন।
পতাকা বৈঠকের পর বিজিবির পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে মরদেহ গ্রহণ করেন মহেশপুর-৫৮ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মুন্সী ইমদাদ হোসেন। এ সময় জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) রিপন কুমার দাস এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মকবুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া দুদেশের পুলিশ সদস্য ও নিহতের স্বজনরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর একই সীমান্তে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয় এবং দ্রুত লাশ ফেরতের দাবি তোলা হয়। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে শনিবার লাশটি ফেরত দেওয়া হলো।
গত ২৯ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মাধবখালী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন শহিদুল। তবে তার মৃত্যুকে ঘিরে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে।
নিহতের স্ত্রী নাসরিন আক্তারের দাবি, শনিবার বিকেলে সীমান্তের দোয়ালের মাঠে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন শহিদুল। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা তাকে ধরে খুব কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে।
অন্যদিকে স্থানীয় সূত্র ও বিএসএফের বরাতে বিজিবি জানায়, শহিদুল ইসলামসহ ৬-৭ জনের একটি দল মাদক আনতে ভারতে প্রবেশ করেছিল। তারা মাধবখালী সীমান্তের ৭০ নম্বর মেইন পিলার থেকে ২০০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে ভারতের মাটিয়ারী ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ সদস্যদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। অভিযোগ রয়েছে, এ সময় শহিদুল তার হাতে থাকা হাসুয়া দিয়ে বিএসএফের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে বিএসএফ গুলি ছুড়লে তিনি আহত হন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
ঘটনার পরদিন ভারতের কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে শহিদুলের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয় এবং লাশটি হাসপাতালের মর্গে রাখা ছিল।




Comments