রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপি অভ্যন্তরীণ কোন্দলে, সুবিধাজনক অবস্থানে জামায়াত
জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সারাদেশের মতো রাজশাহীর রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনেও বাড়তে শুরু করেছে নির্বাচনি উত্তাপ। দুই উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত এই আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে দিনরাত মাঠে সরব রয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনটি পরিণত হয়েছে উত্তপ্ত একটি নির্বাচনী এলাকায়।
এখানে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির প্রবীণ নেতা অধ্যাপক নজরুল ইসলাম মণ্ডল। এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে তীব্র বিরোধ ও বিক্ষোভের ফলে দলের অভ্যন্তরে সৃষ্টি হয়েছে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই তারা এবং তাদের অনুসারীরা রাজপথে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন। মহাসড়ক অবরোধ, দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও স্লোগান—প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে এমন চিত্র। এতে দলের ভেতরে ব্যাপক অস্বস্তি ও বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে।
মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা বিভিন্নস্থানে সভা, মিছিল ও বিক্ষোভ করে দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তবে এই মনোনয়নের বিরোধিতা করে রাজপথে বিক্ষোভ করছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী আবু বকর সিদ্দিক, ইশফা খায়রুল হক ও নাঈম মোস্তফার অনুসারীরা।
দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিয়মিতভাবে মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদ মিছিল করছেন বঞ্চিত প্রার্থীদের সমর্থকরা। তারা দাবি করছেন, অধ্যাপক নজরুল ইসলাম স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় নন এবং তার মনোনয়ন দলীয় ভিত্তিকে দুর্বল করতে পারে। এতে মাঠপর্যায়ে দলটির ঐক্য নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন।
অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হিসেবে জেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারি নূরুজ্জামান লিটন সরবভাবে মাঠে রয়েছেন। জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি নূরুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে সংগঠনটি ভোটারদের মাঝে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন। এছাড়া ইসলামী আন্দোলনের রুহুল আমিন, খেলাফত মজলিসের মুফতি আব্দুল হামিদ, এলডিপির জহুরা শারমিন এবং জেলা এনসিপির সদস্য আবির চৌধুরী নিজ নিজ প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এছাড়াও কয়েকটি দলও প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এবং এলাকায় সক্রিয়ভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এতে করে পুঠিয়া ও দুর্গাপুরে এক ধরনের নির্বাচনি উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজশাহী-৫ আসনে এবারের নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। সেই সঙ্গে সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও তৈরি হয়েছে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রত্যাশা। বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এই আসনে তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অন্যদিকে বিকল্প দলগুলো এই সুযোগে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে মরিয়া।
নির্বাচনী মাঠে প্রতিযোগিতা বাড়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ দলীয় কোন্দলে বিএনপির অবস্থান দুর্বল হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। প্রশাসনও যেকোনো অস্থিতিশীলতা মোকাবেলায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।




Comments