Image description

বাগেরহাট সদর উপজেলায় অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও পাচারের অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী এক নারীর বিরুদ্ধে। নিখোঁজ ওই শিক্ষার্থীর নাম নুসরাত জাহান নিহা (১৪)। সে উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নবিবুর তালুকদারের মেয়ে।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরের পর থেকে নিহা নিখোঁজ রয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিবেশী শিউলি বেগম ও তার ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগী পরিবার। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিহার বয়স যখন মাত্র তিন মাস, তখন তার মা তাকে রেখে অন্যত্র বিয়ে করেন। এরপর থেকে সে দাদি গুলশানারা বেগমের কাছেই বড় হয়েছে।

নিহার দাদি গুলশানারা বেগম বলেন, ‘গত ১০ ডিসেম্বর দুপুরে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে প্রতিবেশী শিউলি বেগম আমার নাতনিকে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। আমি ঘরে ফিরে দেখি আসবাবপত্র এলোমেলো এবং ঘর থেকে কাপড়, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা খোয়া গেছে। বিষয়টি ছেলেদের ও স্থানীয়দের জানানোর পর জানতে পারি, শিউলি বেগম নিহাকে নিয়ে বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ডের দিকে গেছে।’

তিনি আরও জানান, শিউলি বেগম সপরিবারে চট্টগ্রামে বসবাস করেন এবং মাঝে মধ্যে গ্রামের বাড়িতে আসেন। ঘটনার পর স্থানীয়রা চাপ সৃষ্টি করলে শিউলি বেগমের ছেলে রাতুল সরদার স্বীকার করেন যে, তার মা নিহাকে বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে চট্টগ্রামগামী একটি গাড়িতে তুলে দিয়েছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসী শিউলি বেগমের ছেলে রাতুল সরদারকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। খবর পেয়ে সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গৌতম মণ্ডল ঘটনাস্থলে যান। অভিযোগ রয়েছে, এক দিনের মধ্যে নিখোঁজ শিক্ষার্থীকে হাজির করার আশ্বাস দিয়ে রাতুলকে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেন এসআই গৌতম।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর বেশ কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ নিহাকে উদ্ধারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো বিভিন্ন মহল থেকে তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপির ৮ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুর রাজেশ শেখ বলেন, ‘প্রতিবেশী শিউলি বেগম পরিকল্পিতভাবে নিহাকে পাচার করেছেন। আমরা প্রশাসনের হাতে অভিযুক্তের ছেলেকে তুলে দিলেও রহস্যজনকভাবে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের এমন নিষ্ক্রিয়তায় আমরা হতাশ। দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে বাগেরহাট সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, মেয়েটিকে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় এখনো কোনো অপহরণ মামলা হয়নি, তবে একটি সাধারণ ডায়েরি (মিসিং ডায়েরি) করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।’

অভিযুক্ত রাতুলকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া মেনেই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।