বরিশাল নগরীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ, গোপনে ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল এবং পরবর্তীতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এক যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১৮ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী নেত্রী নিজেই বাদী হয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় এই মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্ত যুবকের নাম সুবহান আল তালুকদার (২৪)। তিনি বর্তমানে ‘ধর্ষণ প্রতিরোধ মঞ্চ’ বরিশাল বিভাগের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সক্রিয় সদস্য বলেও জানা গেছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী তরুণী (২২) বরিশাল নগরীর চৌধুরী সড়ক এলাকার বাসিন্দা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সুবহানের সঙ্গে তার পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অভিযোগ রয়েছে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ১১ অক্টোবর সন্ধ্যায় বরিশাল সদর রোডের ‘আবাসিক হোটেল হক’-এর ৪০৪ নম্বর কক্ষে নিয়ে ওই তরুণীকে প্রথমবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন সুবহান। এসময় গোপনে মোবাইলে ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে রাখা হয়।
পরবর্তীতে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ব্ল্যাকমেইল করে ওই নেত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। বিয়ের জন্য চাপ দিলে সুবহান কালক্ষেপণ করতে থাকেন। সর্বশেষ গত ১৭ ডিসেম্বর দুপুরে নবগ্রাম রোড এলাকায় সুবহান তাকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে তিনি বিয়ে করবেন না। একপর্যায়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে সুবহান ওই তরুণীকে হত্যার উদ্দেশ্যে হেলমেট দিয়ে মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করেন। এসময় তরুণীর ঠোঁট ফেটে গুরুতর জখম হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা সহ একাধিক ব্যক্তি সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিযুক্ত সুবহান আল তালুকদার ৫ আগস্টের আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অস্ত্র হাতে তার একাধিক ছবিও ভাইরাল হয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য খাত সংস্কার আন্দোলনের সময় বরিশাল নগর ভবনের সামনে থেকেও তাকে একবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন উল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগী তরুণীর লিখিত এজাহারটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনার বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।




Comments