নান্দাইলে মাদরাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, অফিসে তালা

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার শেরপুর ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. সামছুল হক ফকিরের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অভিভাবক, কমিটির সদস্য ও স্থানীয়রা অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। অধ্যক্ষ নিজেই এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩৪ জন শিক্ষক-কর্মচারীর এই মাদরাসায় শিক্ষার্থী প্রায় ৩০০। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে মাদরাসাটি জৌলুস হারাচ্ছে। সম্প্রতি কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে চতুর্থবারের মতো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, এর আগে তিনবার একই পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রার্থীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েও নিয়োগ সম্পন্ন করেননি অধ্যক্ষ। চতুর্থবারের নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর নির্ধারিত হওয়ায় পূর্বের প্রার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে অধ্যক্ষের কাছে জবাব চাইলে তিনি আবেদন বাতিল করেন।
এক প্রার্থী মনিরুজ্জামান মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) লুৎফুন নাহারের কাছে অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষ চাকরির নামে ৯ লাখ টাকা নিয়েছেন। কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই নিয়োগ কার্যক্রমে দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়ার প্রতিবাদে বুধবার সকালে বিক্ষোভ করে অভিভাবক ও স্থানীয়রা। তারা পাঠদান বন্ধ করে শিক্ষকদের বের করে দিয়ে অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।
কমিটির সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, “অধ্যক্ষ বারবার দুর্নীতির অভিযোগে পার পেয়ে যান। এবার কমিটির সঙ্গে আলোচনা না করে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করেছেন। তাই প্রতিবাদে তালা লাগানো হয়েছে।”
মাদরাসার উপাধ্যক্ষ আব্দুল মতিন জানান, দুপুর ১২টার দিকে কমিটির সদস্য ও স্থানীয়রা পাঠদান বন্ধ করে অফিসে তালা দেন। অভিযুক্ত অধ্যক্ষ মো. সামছুল হক ফকির মোবাইল ফোনে বলেন, “কমিটির সদস্যরা নিয়োগ পদের ভাগ চেয়েছিলেন। স্বচ্ছ নিয়োগের কথা বলায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তালা ঝুলিয়েছেন।”
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।” মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি লুৎফুন নাহার জানান, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন, তবে তালা ঝোলানোর বিষয়টি তার জানা নেই।
Comments