
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রাম বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক বেদনাদায়ক অধ্যায়ের সাক্ষী। ১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এই গ্রামে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের চালানো নির্মম গণহত্যার বিভীষিকা আজও ভোলেনি লাখাইবাসী। এই ঐতিহাসিক দিনে, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা, প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন।
প্রতি বছর ১৮ সেপ্টেম্বর, কৃষ্ণপুরে নিহত শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। শহীদদের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয় এবং তাদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনটি কেবল শোকের নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার এক অনন্য উপলক্ষ।
কৃষ্ণপুর গণহত্যার সেই ভয়াল দিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা কেশব চন্দ্র রায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। চোখের জলে ভাসতে ভাসতে তিনি বলেন, "সেদিন ছিল এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থেকে আসা পাকিস্তানি বাহিনী ১২৭ জনেরও বেশি মুক্তিযোদ্ধাকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছিল। তাদের স্মৃতি বিজড়িত নামগুলো আজও স্মৃতিসৌধে লেখা আছে।"
১৯৭১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর, যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তানি সেনারা স্থানীয় রাজাকার ও আলবদরদের সহযোগিতায় কৃষ্ণপুর গ্রামে অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের লক্ষ্য ছিল গ্রামের নিরীহ মানুষকে হত্যা করে মুক্তি সংগ্রামকে দুর্বল করা। হানাদার বাহিনী গ্রামের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে এবং নারী, পুরুষ ও শিশুদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়।
এই গণহত্যা লাখাই উপজেলার মানুষের মনে এক গভীর ক্ষত তৈরি করে রেখেছে। এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, স্বাধীনতার জন্য জাতিকে কতটা মূল্য দিতে হয়েছে। কৃষ্ণপুর গণহত্যা দিবস শুধু শহীদদের স্মরণ করার জন্য নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণেি
Comments