Image description

গাজীপুরের পূবাইল এলাকায় কৃষিজমির ওপর দিয়ে পাইপলাইন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু ডেজিং করার অভিযোগ উঠেছে। এতে জমি নষ্ট হয়ে ধান চাষ বন্ধ হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষকরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পূবাইল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পূবাইল থানার সোড়ল এলাকার কৃষক বাদল চন্দ্র দাস (৬৩) সহ অন্তত ১৫ জন কৃষক অভিযোগ করেছেন যে, একই এলাকার সাখাওয়াত (৪০), পিতা দলিল উদ্দিন দুলাল; মামুন (৩৫), পিতা গিয়াস উদ্দিন; এবং সালাম মোল্লা (৬০), পিতা অজ্ঞাত, তারা সবাই সাং-বাড়ইবাড়ী, সোড়ল গ্রামের বাসিন্দা। তারা কৃষিজমির ওপর দিয়ে পাইপ বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু ডেজিং কার্যক্রম চালাচ্ছেন। এতে পাইপ ফেটে গিয়ে বালু ফসলি জমিতে ছড়িয়ে পড়ায় কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে।

কৃষকদের অভিযোগ, গত এক বছরে প্রায় ২০ বিঘা জমিতে কোনো ধান চাষ করা সম্ভব হয়নি। জীবিকা নির্বাহের একমাত্র ভরসা কৃষিকাজ ব্যাহত হওয়ায় তারা চরম সংকটে পড়েছেন।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে কৃষকরা বাধা দিলে বিবাদী মামুন ও সালাম মোল্লা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, বিবাদীরা প্রকাশ্যে বলেন, জমির ওপর দিয়েই পাইপ যাবে, বাধা দিলে জমিতেই পুঁতে ফেলা হবে। কৃষকদের দাবি, তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের হওয়ায় ভয়ভীতি ও সামাজিকভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।

এছাড়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, জমিতে প্রবেশ ঠেকাতে বিবাদীরা ভাড়াটে ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী বসিয়ে পাহারা দিচ্ছে। এতে কৃষকরা যেকোনো সময় খুন বা গুমের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন।

স্থানীয়রা জানান, এ ঘটনায় শুধু কৃষি ক্ষতিই নয়, আশপাশের জমি ও পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জমি ভরাট হয়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে, শুকিয়ে যাচ্ছে খাল-বিল। অভিযোগ রয়েছে, একটি প্রভাবশালী চক্র রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে ডেজিং কার্যক্রম চালাচ্ছে, যার ফলে কৃষকদের অভিযোগেও কার্যকর পদক্ষেপ পাওয়া যাচ্ছে না।

ভুক্তভোগী কৃষক বাদল চন্দ্র দাস বলেন,আমরা কৃষিকাজ করেই বাঁচি। জমিতে চাষ করতে না পেরে পরিবার নিয়ে চরম কষ্টে আছি। আবার প্রাণনাশের হুমকিতে ভয়ে দিন কাটাচ্ছি।

ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে অবৈধ বালু ডেজিং বন্ধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।