
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ ইউনিয়নের কুমারভোগ এলাকার ৫ নং ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকায় বর্ষা আসলেই শুরু হয় জলাবদ্ধতা। পদ্মা সেতুর পাশের ওই অঞ্চলটিতে সেতু নির্মাণ করার সময় একদিকে সেতুর পাশের বেরি বাঁধ অন্যদিকে সেতুর কাজ পর্যাবেক্ষন করার জন্য ওই এলাকায় একটি রাস্তা নির্মাণ করা হলে এই জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছেন ওই এলাকার ৫০ থেকে ৬০টি পরিবার।
বর্ষার শুরুতে বৃষ্টি আসা শুরু হলে বৃষ্টির পানি অপসারনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় শুরু হয় জলাবদ্ধতা যা বর্ষার শেষ পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। এতে বৃষ্টির পরিমান বাড়লে ওই এলাকার ঘর বাড়িগুলোর উঠানে হাটু পর্যন্ত পানি জমে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে ওই এলাকার লোকজন।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার ঘরবাড়ি ও আঙিনায় হাঁটু সমান পানি জমে রয়েছে। এতে শিশু ও বৃদ্ধসহ অনেকে চর্মরোগ, ঘা, চুলকানি, ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জলিল তালুকদার বলেন, ছয় হতে সাত মাস আমরা পানিবন্দী থাকি। বৃষ্টি নামলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ড্রেন করার মতো অবস্থা থাকা সত্ব্যেও প্রশাসনের কোনো সহায়তা আমরা এখনো পাইনি। গত এক বছর আগে আমরা সে সময়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির স্যারকে বিষয়টি অবগত করেছিলাম। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন আমাদের পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি ড্রেন করে দিবেন কিন্তু আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সহায়তা পাইনি।
একই এলাকার গৃহবধূ সোনিয়া বেগম বলেন, আগেও আমরা জলবদ্ধতার বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সারাক্ষণ পানিতে থাকতে হয়। ছোট বাচ্চাগুলো সব-সময় পানিতে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। মাঝে মাঝে ঘরের ভেতর সাপও দেখা যায়।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান খান বলেন, অত্র অঞ্চলের পরিবারগুলো চরম দুর্ভোগে আছে। বৃষ্টির সময় ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যদি সরজমিনে এসে দেখতেন, তাহলে বুঝতে পারতেন, মানুষ কতটা কষ্টে আছে।
তিনি অরোও বলেন, দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতায় ডেঙ্গু মশার বিস্তার ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
এ বিষয়ে কুমারভোগ ইউনিয়নের ৪-৫-৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য রিনা বেগম বলেন, আমরা ইতিমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছি। দু’দিন ধরে একটি ড্রেন পরিষ্কার করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেছার উদ্দিন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি খোজঁ নিয়ে আমাদের প্রশাসনের যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন আমরা সে ধরনের ব্যবস্থা নিবো।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা না নিলে এ জলাবদ্ধতা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
Comments