বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) নির্বাচনের প্রবক্তাদের ‘মাস্টার প্ল্যান’ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় সংকট সৃষ্টি হলে ‘কালো ঘোড়ার অনুপ্রবেশ’ হতে পারে।

বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রুহুল কবির রিজভী এই শঙ্কা প্রকাশ করেন।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, "বিশ্বের অধিকাংশ গণতান্ত্রিক দেশ যেগুলো অতি উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ যেমন ব্রিটেন, আমেরিকা যদি আমরা বলি বা আরও অন্য দেশে প্রতিনিধি নির্বাচনের যে পদ্ধতিটা চালু আছে- সরাসরি প্রার্থীকে ভোট দেওয়া। আমাদের এখানে কী এমন ঘটনা ঘটলো যে পিআর উৎকৃষ্ট গণতন্ত্রের মডেল? এটা আমার মনে হয়, অবান্তর কথা তারা (জামায়াতে ইসলামী) বলছেন। এটা বলে একটা বিভ্রান্তি তৈরি করছেন অথবা তাদের অন্য কোনো মাস্টার প্ল্যান আছে কি না আমি জানি না।"

তিনি আরও বলেন, "আমি মনে করি যে যারা গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন, তারা সবাই এমন এক জায়গায় উপনীত হবেন যাতে আমাদের পরবর্তী গণতন্ত্রের অভিযাত্রার পথে আমাদের যেন বিঘ্ন না ঘটে। তা না হলে কালো ঘোড়া প্রবেশ করতে পারে, কালো ঘোড়া ঢুকে যেতে পারে।"

রিজভী বলেন, "উন্নত দেশ দীর্ঘ দিনের গণতন্ত্র চর্চার দেশেও এখন কথা উঠেছে, এই পদ্ধতিতে (পিআর) জনমতের ট্রু রিফ্লেকশন হয় না। এ নিয়ে সেই সব দেশে আলাপ-আলোচনা, বিতর্ক চলছে। আপনি জানেন যে, জাপান গণতন্ত্রের দিক থেকে অতি উন্নত একটি দেশ এবং সেখানেও ৩৭ শতাংশ পিআর পদ্ধতি চালু আছে। যেখানে সারা বিশ্বেই পিআর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে, কোথাও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়িত হয়নি, সেখানে হঠাৎ করে আমাদের এখানে কেন চালু করতে চাইবেন?"

তিনি মনে করেন, "জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে আপনি হঠাৎ করে পিআরের কথা বলেন, এতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করবে। আমি এ পর্যন্ত যত জরিপ দেখেছি, বিশেষ করে গণমাধ্যমে- সেখানে অধিকাংশ মানুষের আনুপাতিক হারে ভোট পদ্ধতি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। অনেকেই কনফিউজড অবস্থায় আছেন।"

গণভোট ও নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, "জুলাই সনদে গণভোটের যে ব্যাপারটা রয়েছে, দু-একটি দল চাচ্ছে তারা এটি আগে করার জন্য। এখন আগে আপনি কখন করবেন? যদি জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে হয়, কারণ ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে রোজা শুরু হবে। তাহলে নিশ্চয়ই রোজার আগে নির্বাচন করতে হবে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন এবং গণভোট একসঙ্গে করা ছাড়া তো আর অন্য কোনো গত্যন্তর নেই।"

রিজভী আরও বলেন, "জাতীয় নির্বাচন দ্রুত হওয়া জরুরি। সবাই মনে করছেন যে, দেশে রাজনৈতিক সমস্যা, অর্থনৈতিক সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। আপনারা অর্থনৈতিক অবস্থা দেখছেন যে, বিনিয়োগ একেবারে শূন্যের কোঠায়। কারণ, নির্বাচিত সরকার নেই।"