Image description

পাঁচ দফা দাবি আদায়ে এবতেদায়ী শিক্ষকদের ‘লং মার্চ টু যমুনা’ পদযাত্রা রাজধানীর কদম ফোয়ারা এলাকায় আটকে দিয়েছে পুলিশ। রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে এবতেদায়ী শিক্ষকরা প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন 'যমুনা' অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করার পরপরই পুলিশি বাধার মুখে পড়েন। বর্তমানে পুলিশ ও শিক্ষকরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন।

স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্য জোট আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক শামসুল আলম বেলা ৩টায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, "আমরা দুপুর ২টার দিকে যমুনার উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করলে পুলিশ আমাদের কদম ফোয়ারার সামনে আটকে দিয়েছে। আমরা এখানেই অবস্থান ধরে রেখেছি।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা এখানেই জোহরের নামাজ আদায় করেছি এবং আপাতত এখানেই অবস্থান করব। সরকারের প্রতি আহ্বান, বছরের শুরুতে দেওয়া জাতীয়করণের আশ্বাস দ্রুত বাস্তবায়ন করুন এবং আমাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিন।"

সব এবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণসহ ৫ দফা দাবিতে গত ১৩ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।

তাদের মূল দাবিগুলো হলো:

চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারির জাতীয়করণের ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

এমপিওভুক্তির জন্য কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ যে ১০৮৯টি প্রতিষ্ঠানের নথি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে পাঠিয়েছে, তার দ্রুত অনুমোদন দিতে হবে।

অনুদানহীন স্বীকৃত এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর এমপিও আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় প্রাক-প্রাথমিক পদ সৃষ্টি করতে হবে।

এবতেদায়ী মাদ্রাসার জন্য আলাদা অধিদপ্তর স্থাপন করতে হবে।

ইসলামি ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বয়ে গঠিত আলিয়া মাদ্রাসা পদ্ধতির আওতায় পরিচালিত হয় এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো, যা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৯৮৪ সালে এগুলোর গোড়াপত্তন হলেও চার দশক ধরে শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শিক্ষকরা বলছেন, তাদের অনেকেই রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই কর্মজীবন শেষ করেছেন। অথচ ১৯৭৩ সাল থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হচ্ছে এবং ২০১৩ সালেও ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসা স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকরা দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। এর আগে তাদের এক পদযাত্রায় পুলিশ লাঠিপেটা ও জলকামান ব্যবহার করেছিল। বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের ওপর হামলার সেই ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। তারই ফলস্বরূপ গত ২৮ জানুয়ারি এবতেদায়ী মাদ্রাসাকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন মাদ্রাসা অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক। জাতীয়করণের উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রথমে এমপিওভুক্তি করার কথা ছিল।